খিয়ারপাড়া গণহত্যা (পার্বতীপুর, দিনাজপুর)
খিয়ারপাড়া গণহত্যা (পার্বতীপুর, দিনাজপুর) সংঘটিত হয় আগস্ট মাসে। এতে ৮-১০ জন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারায়।
পার্বতীপুরে খিয়ারপাড়া নামে দুটি পাড়া আছে। এটির অবস্থান ৪নং পলাশবাড়ি ইউনিয়নে। অপরটির অবস্থান ৫নং চণ্ডীপুর ইউনিয়নে। এখানে গণহত্যার ঘনা ঘটে। মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে তা হয়। ঘটনার সময় পাকহানাদাররা গ্রামের লোকজন ডেকে খিয়ারপাড়ায় একটি খাল খনন করায়। খাল খননের পর তাদের খিয়ারপাড়ার একটি মোড়ে গুলি করে হত্যা করে। খিয়ারপাড়া গণহত্যায় ফকিরপাড়ার আব্দুর রেজ্জাক (পিতা মো. সোবহানউদ্দিন) ও অমেশ হক প্রামাণিক (পিতা আলিবউদ্দিন প্রামাণিক), বাঙালিপুরের সৈয়দুল ইসলাম (৩৬) ও শমসাল ইসলাম (৩৮) (পিতা শাহাদ প্রামাণিক)সহ ৮-১০ জন শহীদ হন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী চলে যাবার পর স্থানীয়রা শহীদদের মাটিচাপা দেয়। স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে এ মোড়টি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মোড় হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
চণ্ডীপুর ইউনিয়নের খিয়ারপাড়ায় মে মাসের দিকে পাকিস্তানি সেনা ও বিহারিরা আকস্মিক আক্রমণ চালায়। তারা পাড়ার বাড়িঘর থেকে গরু, ছাগলসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে। এরপর তারা পাড়ার শরৎ চন্দ্র রায় (৪২), তার স্ত্রী ফুলমনি রায়, তার জামাই হরেশ্বর চন্দ্র রায় (২১), মেয়ে তারাবালা রায় এবং সমো নামে আরেকজন কিশোরীকে এক সঙ্গে ধরে নিয়ে যায়। তিন দিন পর ফুলমনি, তারাবালা ও সমোকে ছেড়ে দিলেও শরৎ চন্দ্র রায় ও জামাই হরেশ্বর চন্দ্র রায়ের কোনা সন্ধান পাওয়া যায়নি। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড