You dont have javascript enabled! Please enable it! বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবী খান আবদুল ওয়ালী খান - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবী খান আবদুল ওয়ালী খান

খান আবদুল ওয়ালী খান (১৯১৭-২০০৬) পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবী। সমর্থকদের কাছে ‘বাবা’ নামে পরিচিত খান আবদুল ওয়ালী খান ১৯১৭ সালের ১১ই জানুয়ারি অবিভক্ত ভারতের
(বর্তমান পাকিস্তানের) খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের চরসাদ্দা জেলার উটমানজাইতে জন্মগ্রহণ করেন। উটমানজাইয়ের আজাদ ইসলামি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ শেষে তিনি দেরাদুনের কর্নেল ব্রাউন ক্যামব্রিজ স্কুল থেকে ১৯৩৩ সালে ক্যামব্রিজ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। দৃষ্টিশক্তির সমস্যার কারণে তিনি আর পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারেননি। কৈশোরেই তিনি খুদাই খিদমতগার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। তারপরই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং দলের প্রাদেশিক যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-তে যোগদান করেন এবং দলে বিভক্তির পর (১৯৬৭) ন্যাপ (ওয়ালী)-এর সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি নিজ এলাকা চরসাদ্দা থেকে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে তিনি আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি) গঠন করেন। জীবনে বহুবার তাঁকে কারাবরণ করতে হয়। তিনি ২০০৬ সালের ২৬শে জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সুহৃদ খান আবদুল ওয়ালী খান ও তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা বাংলাদেশে গণহত্যা বন্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে গোপনে প্রচারপত্র ও পোস্টার বিলি করেন। সামরিক শাসন বলবৎ থাকা সত্ত্বেও তিনি গণমাধ্যমে ও বিভিন্ন সমাবেশে গণহত্যার বিরুদ্ধে লেখা প্রকাশ ও বিবৃতি প্রদান করেন। পাকিস্তানের বিবেকবান নাগরিকদের কাছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্পষ্ট করে তোলা ও পাকিস্তানে থেকে গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করা ছিল সাহসী পদক্ষেপ। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সাহসী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমাপ্রার্থনার তিনি দৃঢ় সমর্থক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১লা অক্টোবর ২০১৩ খান আবদুল ওয়ালী খান-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড