খান চা বাগান গণহত্যা (জৈন্তাপুর, সিলেট)
খান চা বাগান গণহত্যা (জৈন্তাপুর, সিলেট) সংঘটিত হয় ১৭ই এপ্রিল। এ গণহত্যায় ১৭ জন শ্রমিক শহীদ হন। সিলেট শহর থেকে তামাবিল সড়ক ধরে ১২ মাইল দূরে খান চা বাগান। এর মালিক ছিল আতা মোহাম্মদ খান নামে এক অবাঙালি। এ চা বাগানটি জৈন্তাপুর উপজেলার অন্তর্গত। ১৭ই এপ্রিল সকালে চা বাগানের শ্রমিকরা সবেমাত্র তাদের কাজকর্ম শুরু করেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সামরিক কনভয়কে শহর থেকে ঐ রাস্তা ধরে অগ্রসর হতে দেখা যায়। একই সঙ্গে আকাশে বোমারু বিমানের শব্দ। এ অবস্থায় শ্রমিকরা প্রাণভয়ে তামাবিল সড়ক পথে ভারত সীমান্তের দিকে পালিয়ে যেতে থাকে। প্রায় তিন মাইল পথ অতিক্রম করে তারা খরিসের সেতুর ওপর ওঠে চা বাগানের মালিকের অনুরোধে ঠিক সেই মুহূর্তে পাকিস্তানি বাহিনীর একটি দল তাদের পথ রোধ করে এবং শ্রমিকদের চা বাগানে ফিরে যেতে বাধ্য করে।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শ্রমিকদের মধ্য থেকে ১৭ জন যুবককে আটক করে তাদের দিয়ে গোলাবারুদ বহন ও বাঙ্কার খনন করায়। রাতে তাদের দিয়ে খরিস সেতুর বাম পাশে একটি গর্ত খনন করার পর সেই গর্তে তাদের ঢোকানো হয়। অতঃপর পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের ওপর উপর্যুপরি গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। এদিনের গণহত্যায় শহীদ ১৭ জনের মধ্যে ১৩ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন— বংশী মাঝি, নন্দলাল বাড়ৈ, অগু কুরুয়া, ছিকরা কুরুয়া, মিকরা কুরুয়া, বুধ সাঁওতাল, আকলা ভূঁইয়া, পুষুয়া কুরুয়া, ছম্রা কুরুয়া, রামচান্দ কুরুয়া, হীরালাল কুরুয়া, ভীম কুরুয়া ও মংরু কর্মকার। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড