খানখানাপুর-রামপুর গণহত্যা (রাজবাড়ী সদর)
খানখানাপুর-রামপুর গণহত্যা (রাজবাড়ী সদর) সংঘটিত হয় ৩০শে মে ও ১লা জুন। এতে ১১ জন নিরীহ মানুষ শহীদ ও কয়েকজন আহত হন।
২১শে এপ্রিল রাজবাড়ীতে অনুপ্রবেশ করে পাকিস্তানি বাহিনী রাজবাড়ীর খানখানাপুরে ক্যাম্প স্থাপন এবং তাদের সহযোগীদের নিয়ে শান্তি কমিটি গঠন করে। তারা অবাঙালি বিহারি এবং মুসলিম লীগ- সমর্থক ও রাজাকারদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়। এরপর স্থানীয় দোসর রাজাকার- আলবদরদের সঙ্গে নিয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলায় লুটপাটসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়। রাজাকারদের সহযোগিতায় তারা বাড়িঘরে ব্যাপক লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করে এবং গুলি ছুড়ে মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
৩০শে মে খানখানাপুর বিহারি কলোনির বিহারিরা খানখানাপুর সাহাপাড়ায় হামলা ও লুটপাট চালায়। এ-সময় তারা সাহাপাড়ার লোকনাথ সাহা, কেতরীয়া শীল, জগদীশ শীল, নগেন্দ্রনাথ শীল এবং তাদের একজন অতিথিসহ মোট ৫ জনকে হত্যা করে। বেশ কয়েকজন আহত হয়।
১লা জুন রামপুরের সাবেক জমিদার পরিবারের সন্তান আদ্যনাথ সেনের বাড়িতে আলাদিপুর কলোনির বিহারিরা আক্রমণ করে। তাঁর ছোট ছেলে আশুরঞ্জন সেন তখন শহীদ ওহাবপুর (সাবেক মামুনপুর) ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন। এ আক্রমণ ও লুটপাটের সময় তিনি ও অন্যসব যুবক পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও আদ্যনাথ সেনসহ ৬ জনকে বিহারিরা নির্যাতনপূর্বক হত্যা করে। এ গণহত্যায় শহীদরা হলেন— আদ্যনাথ সেন (পিতা প্রহ্লাদ চন্দ্ৰ সেন), সরুজু বালা সেন (স্বামী আদ্যনাথ সেন), বিনয় চন্দ্র সেন (পিতা বিজয় গোপাল সেন), ঝরু দে (পিতা অবিনাশ চন্দ্ৰ দে), মুকুল চন্দ্র বসু (পিতা নরেশ চন্দ্র বসু) ও মাখনলাল দে। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড