You dont have javascript enabled! Please enable it!

খাঁড়ির ব্রিজ শ্মশানঘাট হত্যাকাণ্ড (আদমদীঘি, বগুড়া)

খাঁড়ির ব্রিজ শ্মশানঘাট হত্যাকাণ্ড (আদমদীঘি, বগুড়া) সংঘটিত হয় নভেম্বর মাসে। এতে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উপজেলার চার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন (চক সোনার, ছাতিয়ানগ্রাম), আব্দুল জলিল (কোমারপুর), মনসরুল হক টুলু (কাঞ্চনপুর, চাঁপাপুর) এবং আব্দুস সাত্তার (চাঁপাপুর) পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার- বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। রাজাকাররা এঁদের সান্তাহার- বগুড়া সড়কের পাশে খাঁড়ির ব্রিজ শ্মশান ঘাটে নিয়ে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল ও আলতাফ হোসেন তাঁদের এক সহযোদ্ধা ছোট আখিড়া গ্রামের আকরাম হোসেনকে যুদ্ধে নিয়ে যাওয়ার জন্য সে গ্রামে আসেন। এ সময় আকরাম হোসেন তাঁর পিতা জসিম উদ্দীনের সঙ্গে গ্রামের পাশে জমিতে ধান কাটছিলেন। জসিম উদ্দীন ছিল এলাকার রাজাকার সংগঠক আব্দুল মজিদ তালুকদারের লোক। দুই মুক্তিযোদ্ধাকে দেখতে পেয়ে সে কৌশলে জমি থেকে সড়ে পড়ে এবং রাজাকার খোকাকে (জাহানাবাদ) সঙ্গে নিয়ে দ্রুত আব্দুল মজিদ তালুকদারকে মুক্তিযোদ্ধাদের আগমনের সংবাদ জানিয়ে দেয়। আব্দুল মজিদ তালুকদার সঙ্গে-সঙ্গে সংবাদটি আদমদীঘি থানায় পাকবাহিনীর ক্যাম্পে পৌঁছে দিলে পাকবাহিনী এসে ধান ক্ষেতের চারদিক ঘিরে ফেলে। সেখান থেকে তারা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল ও আলতাফ হোসেনকে ধরে তাঁদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় এবং লুকিয়ে রাখা অস্ত্র উদ্ধার করে। পরে তাঁদের আদমদীঘি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। একই দিন উপজেলার কোমারপুর গ্রাম থেকে অপর দুই মুক্তিযোদ্ধা মনসরুল হক ও আব্দুস সাত্তারকেও হানাদার বাহিনী ধরে থানায় নিয়ে আসে। চারদিন ধরে চার মুক্তিযোদ্ধার ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। খেজুর গাছের কাটাযুক্ত ডাল দিয়ে পিটিয়ে সমস্ত শরীর ক্ষতবিক্ষত করা হয়। এরপর ১৩ই নভেম্বর রাজাকার সংগঠক আব্দুল মজিদ তালুকদারের উপস্থিতিতে পাকসেনারা গুলি করে তাঁদের হত্যা করে। [মো. খায়রুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!