কোদালকাটি গণহত্যা (রাজিবপুর, কুড়িগ্রাম)
কোদালকাটি গণহত্যা (রাজিবপুর, কুড়িগ্রাম) সংঘটিত হয় ৪ঠা অক্টোবর। এদিন পাকবাহিনী কোদালকাটি ইউনিয়নের সাজাই গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি গ্রামের ৬০-৬৫ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এ গণহত্যাটি রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা।
১লা অক্টোবর কোদালকাটির যুদ্ধ-এ প্রায় ১৫০ জন পাকসেনা নিহত হলে হানাদাররা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ডেকে আনাসহ তাঁদের সাহায্য- সহযোগিতা করার অভিযোগ তুলে স্থানীয় লোকজনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ৪ঠা অক্টোবর তারা ৬০-৬৫ জন নিরীহ মানুষকে রশি দিয়ে বেঁধে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে সাজাই গ্রামের এক নিচু জমিতে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে। ৫ই অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা গ্রামবাসীদের সহায়তায় গণহত্যার শহীদদের লাশগুলোর মধ্যে ৫৩ জনকে শনাক্ত করে মাওলানা ইসাহাক আলীর বাড়ির পশ্চিম পাশের নিচু ভূমিতে গণকবর দেয়। গণহত্যার শিকার শহীদরা হলেন- শংকর মাধবপুর গ্রামের আবদুর রহমান (পিতা নিজাম উদ্দিন), মোকছেদ আলী (পিতা মলফু দেওয়ানী), মোহাম্মদ আলী (পিতা মলফু দেওয়ানী), আবদুল শেখ (পিতা ঘুতু শেখ), রেজিয়া খাতুন (স্বামী আবদুল মজিদ), নয়ান শেখ (পিতা করিম শেখ), হাজী এন্তাজ আলী (পিতা জাবেদ আলী), ছিদ্দিক মণ্ডল (পিতা সেরাজ মন্ডল), খোরশেদ আলী মুন্সী (পিতা আছর উদ্দিন মুন্সী), আবদুল বারী (পিতা মুলুক চান্দ বেপারী), কুতুব আলী (পিতা ইনসাব আলী), মনতাজ আলী দেওয়ানী (পিতা হোসেন ফকির), বাদশা দেওয়ানী (পিতা ছন্দু মুন্সী), আবদুল গণি (পিতা সাহেব আলী), আয়নাল হক (পিতা আবদুল জব্বার), ফজল হক (পিতা আবদুল জব্বার), পাহালী শেখ (পিতা আয়েন উদ্দিন গাইরাল), মোকছেদ আলী (পিতা আয়েন উদ্দিন গাইরাল), জুরান শিকদার (পিতা গোমর শিকদার), নূর ইসলাম (পিতা আবদুল কাইয়ুম), আজিজুর রহমান (পিতা আবদুল কাইয়ুম), আজিজুল হক (পিতা আবদুল কাইয়ুম), আজিবর রহমান (পিতা তজু দেওয়ানী), ময়ান শেখ (পিতা কছিম উদ্দিন শেখ), হেলাল বেপারী (পিতা মকবুল শেখ), নতুব আলী শেখ (পিতা হেলাল বেপারী), জব্বার আলী (পিতা নহেজ উদ্দিন), মেজাল শেখ (পিতা মহিম উদ্দিন), হযরত আলী (পিতা ওফাজ উদ্দিন), লাল চান্দ (পিতা পানা উল্লাহ), এন্তাজ দেওয়ানী (পিতা হোসেন আলী ফকির), আবদুল আজিজ (পিতা মো. ছোরহাব), আয়বী বেওয়া (পিতা আজিজ উদ্দিন শেখ); সাজাই গ্রামের আবুল উদ্দিন (পিতা তজু দেওয়ানী), আয়েন উদ্দিন (পিতা পানা উল্লাহ), কছিম উদ্দিন (পিতা আগর আলী), আছমত আলী (পিতা সোলতান মুন্সী), আবদুল মজিদ (পিতা আবদুস সোবহান), সোবহান বেপারী (পিতা জরিফ বেপারী), মফিজ উদ্দিন (পিতা ময়েন গাইরাল); কোদালকাটি গ্রামের ইনুছ শেখ (পিতা সোরহাব), ছিদ্দিক আলী (পিতা মেছের আলী), মজিদ সরকার (পিতা বায়েস উদ্দিন), নহেজ আলী (পিতা সাদু মোল্লা), তোরান মোল্লা (পিতা কুতুব মোল্লা), আবদুল গফুর (পিতা ছোবহান সরকার), সোহাগী বেওয়া (পিতা ফজর মোল্লা), মেরাজ উল্লাহ শেখ (পিতা আস্রাব আলী শেখ); ভেলামারী গ্রামের জামসেদ আলী (পিতা জাবেদ মুন্সী), সাইদুল ইসলাম (পিতা আবদুল মজিদ), রোস্তম আলী (পিতা তোরাব আলী), ডালিমন বেগম (স্বামী মকবুল আলী মুন্সী) এবং তেররশি গ্রামের বিষু শেখ (পিতা তমেজ উদ্দিন)। [মো. আব্দুস সবুর ফারুকী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড