কোদালা চা বাগান পাক ক্যাম্প অপারেশন (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম)
কোদালা চা বাগান পাক ক্যাম্প অপারেশন (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় ১৪ই ডিসেম্বর। এতে কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য হতাহত হয়। অপরদিকে কয়েকজন গ্রামবাসী শহীদ ও আহত হন।
নভেম্বর মাসের দিকে অশোক মিত্র কারবারীর কমান্ডে এক কোম্পানি মুক্তিযোদ্ধা দেমাগ্রী থেকে পাহাড়ি পথে বান্দরবান, পটিয়া ও বোয়ালখালী হয়ে রাঙ্গুনিয়ার দক্ষিণাঞ্চল সরফভাটা, শিলক ও পদুয়া এলাকায় প্রবেশ করে। এ গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকাংশই ছিলেন রাঙ্গুনিয়ার। রাঙ্গুনিয়ার মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহে কর্ণফুলী নদী ও চট্টগ্রাম-কাপ্তাই রোড নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে তাঁরা এ এলাকায় আসেন। অস্ত্রের মধ্যে তাঁদের ছিল ৪টি এলএমজি, ২টি দুই ইঞ্চি মর্টার এবং এসএলআর ও রাইফেলসহ বিস্ফোরক দ্রব্য।
ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে কমান্ডার অশোক মিত্র কারবারীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বোয়ালখালী থেকে রাঙ্গুনিয়ায় এসে সরফভাটার বড়খোলা এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করেন। এ- সময় তাঁরা জানতে পারেন পাহানাদার বাহিনী কয়েকদিন আগে কোদালা চা বাগানে ক্যাম্প স্থাপন করেছে। ১৪ই ডিসেম্বর সকালে তাঁরা চারদিক থেকে উক্ত ক্যাম্প আক্রমণ করেন। সারাদিন উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। এতে পাকসেনাদের কয়েকজন হতাহত হয়। এ-সময় পাকসেনাদের গুলিতে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী শহীদ ও আহত হন। সন্ধ্যার দিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী টিকতে না পেরে নদী পার হয়ে রাঙ্গুনিয়া কলেজ ক্যাম্পে ফিরে যায়। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা কোদালা চা বাগানে অবস্থান নেন এবং নিরাপত্তার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
কমান্ডার অশোক মিত্র কারবারী বাহিনীতে এক কোম্পানি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। অধিনায়ক অশোক মিত্র কারবারী ও ডেপুটি কমান্ডার ইপিআর হাবিলদার আবদুল হামিদ-এর নেতৃত্বে আর্মি ক্যাম্প আক্রমণে অংশগ্রহণ করেন কমান্ডার আরমান আলী, আবদুল জলিল, বজলুর রহমান, আবদুর রশিদ, মো. ইসমাইল, মো. ইসমাইল হোসেন, বশির আহমদ, দিদারুল আলম, জিনপদ বড়ুয়া, সুশান্ত বড়ুয়া, সুদত্ত বড়ুয়া, দেবপ্রিয় বড়ুয়া, নূরুল আলম, দুলু বড়ুয়া, শিবু বড়ুয়া, কাজল বড়ুয়া, অটল মুৎসুদ্দি প্রমুখ। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড