You dont have javascript enabled! Please enable it!

কৈডাঙ্গা রেলব্রিজ অপারেশন (চাটমোহর, পাবনা)

কৈডাঙ্গা রেলব্রিজ অপারেশন (চাটমোহর, পাবনা) পরিচালিত হয় ২৮শে আগস্ট। এটি ছিল কৈডাঙ্গা রেলব্রিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা নিয়ে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। পাবনা জেলার চাটমোহর থানার গুমানী নদীর ওপর কৈডাঙ্গা রেলব্রিজ অবস্থিত। গেরিলা কমান্ডার গাজী এস এম মোজাহারুল হকের নেতৃত্বে মো. আজাহার আলী, মো. আব্দুল লতিফ, আওরঙ্গজেব বাবলু, মো. আফছার আলী, মো. গোলজার হোসেন, মো. আব্দুর রউফ, মো. আব্দুল মজিদ, মো. হাবিবুর রহমান, মনজুর রহমান, মো. তোরাব আলী, মো. আব্দুর রহিম, সুবোধ কুমার দে (টিংকু), মো. মাহাতাব উদ্দিন, মো. আফজাল হোসেন, মো. কেফায়েত উল্লাহ প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা এ-যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা সকলেই ভারত থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সিরাজগঞ্জ থেকে উল্লাপাড়া, চাটমোহর হয়ে ঈশ্বরদী পর্যন্ত রেল যোগাযোগ সচল রাখার জন্য পাকসেনারা কৈডাঙ্গা রেল ব্রিজে নিরাপত্তা জোরদার করে। দুজন মিলিশিয়ার নেতৃত্বে প্রায় শ’ খানেক -রাজাকার- সার্বক্ষণিক ব্রিজটি পাহারা দিত। কমান্ডার এস এম মোজাহারুল হক ২৮শে আগস্ট রাজাকারের বেশে দিনের বেলায় কৈডাঙ্গা ব্রিজের কৌশলগত অবস্থান পর্যবেক্ষণ করেন এবং সন্ধ্যার পর ১৫ জন গেরিলা নিয়ে ব্রিজ আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। তিনি সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের তিনটি দলে ভাগ করে ব্রিজের উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে মোতায়েন করেন এবং বিশ্বস্ত অনুচর ও চাচা মো. আজাহার আলীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি রাজাকারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অতি গোপনে ব্রিজের পূর্বপাশে অবস্থান নেন। মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য তিনটি অবস্থান থেকে আধ ঘণ্টা পরপর একটি করে ফাঁকা গুলি করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক অবস্থান নির্ণয় করতে না পেরে রাজাকারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এবং তারা ব্রিজের পূর্বদিকে পালানোর চেষ্টা করে। রাজাকাররা নাগালে আসামাত্র কমান্ডার গাজী এস এম মোজাহারুল হক ব্রাশ ফায়ার করেন। পাঁচ মিনিট স্থায়ী এ-যুদ্ধে রাজাকাররা পাল্টা গুলি করার কোনো সুযোগ পায়নি। যুদ্ধে দুজন মিলিশিয়াসহ ৪০ জন রাজাকার মারা যায় এবং একটি এলএমজি-সহ ৪২টি অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। যুদ্ধে জয়লাভের ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে চাটমোহরের বিভিন্ন ব্রিজ ও কালভার্টে পাহারারত রাজাকারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। [মো. ছাবেদ আলী]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!