You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.29 | কৈবল্যধাম রেলসেতু অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর) - সংগ্রামের নোটবুক

কৈবল্যধাম রেলসেতু অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর)

কৈবল্যধাম রেলসেতু অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর) পরিচালিত হয় ২৯শে অক্টোবর। চট্টগ্রামের উত্তর কাঠটুলি রেললাইনের কর্নেল হাট-বাজারের পেছনের এ সেতুতে অপারেশন পরিচালনার লক্ষ্য ছিল পাকবাহিনীর রেল যাতায়াত বিঘ্নিত করা এবং পাকিস্তানি সেনাদের একটি টহল ট্রেন ধ্বংস করা। চট্টগ্রামের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমানের পরামর্শে এবং তরুণ মুক্তিযোদ্ধা ও বিস্ফোরক বিষয়ে ভারতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রইসুল হক বাহারের পরিকল্পনায় এ অপারেশন পরিচালিত হয়। রইসুল হক বাহার ছিলেন এ অপারেশনের গ্রুপ কমান্ডার। ডা. মাহফুজুর রহমান তাঁকে অপারেশন পরিচালনায় বিস্ফোরক ও অন্যান্য উপকরণ সামগ্রী সরবরাহ করেন। অন্য যেসব মুক্তিযোদ্ধা এতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন তাঁরা হলেন- তোফাজ্জল হোসেন, আনোয়ার, মো. মুছা খান, ইমতিয়াজ উদ্দিন পাশা, বেলায়েত আলী বেলা, শফিকুল আলম বাদল, মো. শফি প্রমুখ। রেকির দায়িত্ব পালন করেন মো. মুছা খান ও অপারেশন বাস্তবায়নকারী রইসুল হক বাহার। একাধিক দিন তাঁরা এ কাজটি করেন।
অপারেশনের দিন সন্ধ্যায় রইসুল হক বাহার সেতুর গার্ডারে এবং রেল লাইনের লোহা ও পাতে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক স্থাপন করেন। এজন্য তিনি পুল সুইস ব্যবহার করেন এবং প্রায় ১০০ গজ পর্যন্ত নাইলন কর্ড টেনে দেন। অপারেশনে যেসব বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে ছিল টিএন্ডটি স্লাব, জিসি স্লাব, প্লাস্টিক স্লাব, কর্ডেক্স ও প্রাইমার। মাত্র ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে বিস্ফোরক স্থাপন এবং সুইস লাগানো ও কর্ড টানা হয়। পাকসেনাবাহী একটি ট্রেন সেতুর ওপর ওঠার সঙ্গে-সঙ্গে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের শব্দ শুনে চারদিকের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। শক্তিশালী এ বিস্ফোরণে ট্রেনের বগিগুলো দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং অর্ধশত পাকসেনা নিহত ও শতাধিক আহত হয়। বিবিসি ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এ অপারেশনের সংবাদ গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করা হয়। [সাখাওয়াত হোসেন মজনু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড