বীর প্রতীক কে এম রফিকুল ইসলাম
কে এম রফিকুল ইসলাম, বীর প্রতীক (১৯৫০-১৯৭১) শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৫০ সালের ২৮শে ডিসেম্বর কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আসাদ আলী খান, মাতার নাম রাবেয়া খানম।
কে এম রফিকুল ইসলাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পূর্বে তিনি ভেড়ামারা গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্পের দক্ষ মেকানিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাকরিজীবী হিসেবে তিনি পাকিস্তানি
শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণের বিষয়ে অবগত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন। বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে এপ্রিল মাসে সীমান্ত অতিক্রম করে তিনি ভারতে যান এবং ভারতের চাকুলিয়ায় প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে ৮নং সেক্টরের অধীনে শিকারপুর সাব- সেক্টরে যোগদান করেন। তাঁর কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট আবুল কালাম। কুষ্টিয়া, খোকসা, কুমারখালি, মিরপুর, দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা এ সাব-সেক্টরের অধীনে ছিল।
কে এম রফিকুল ইসলাম কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের দোসর রাজাকারদের বিরুদ্ধে গেরিলা হামলা এবং সম্মুখ যুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় দেন। ৭ই ডিসেম্বর তিনিসহ মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল কুষ্টিয়া জেলা সদর অভিমুখে রওনা হলে হরিশংকর গ্রামে অবস্থানরত একদল পাকিস্তনি সেনা তাঁদের আক্রমণ করে। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। সহযোদ্ধারা গ্রামবাসীর সহায়তায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে সমাহিত করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় প্রদান ও জীবন উৎসর্গ করার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক কে এম রফিকুল ইসলামকে ‘বীর প্রতীক’ (মরণোত্তর) খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। [মো. ওসমান গনী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড