You dont have javascript enabled! Please enable it!

কেউন্দিয়া যুদ্ধ (কাউখালী, পিরোজপুর)

কেউন্দিয়া যুদ্ধ (কাউখালী, পিরোজপুর) ২২শে সেপ্টেম্বর সংঘটিত হয়। এ-যুদ্ধে ৯ জন পাকিস্তানি সৈন্য ও ৮ জন রাজাকার- নিহত হয়। আমান গোল, শেরে গোল ও মানিক গোল নামে ৩ জন বেলুচ সৈন্য মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে। এ-সময় হানাদারদের ৩টি এলএমজি, ৬টি এসএমজি, ২টি মর্টার ও বেশকিছু গোলাবারুদ মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।
উপজেলার কেউন্দিয়া ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের শক্ত ঘাঁটি। কাউখালী থানা থেকে পুলিশ ও রাজাকারের দল প্রায়ই কেউন্দিয়া গ্রামে আসত। স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধাদের ধরার জন্য তারা গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে তল্লাশি চালাত এবং লুটপাট করত। গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক শক্তিশালী থাকায় সহজেই মুক্তিযোদ্ধারা হানাদারদের আগমনের খবর জানতে পারতেন। হানাদার-রাজাকারদের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আজাদ তাদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। হানাদার বাহিনী অপারেশনে এসে প্রথমেই কেউন্দিয়া হাইস্কুল মাঠে সমবেত হতো। মুক্তিযোদ্ধারা হানাদারদের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করতে থাকেন। তাদের আগমনের খবর পেয়ে কমান্ডার হাবিবুর রহমান ও আ. হাই পনা অর্ধশত মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে কেউন্দিয়া স্কুল এবং বাজারের পাশে সুপারি বাগান, জঙ্গলের ভেতর এবং খালের পাড়ে এম্বুশ করে অপেক্ষা করতে থাকেন। ২২শে সেপ্টেম্বর হানাদার বাহিনী কেউন্দিয়া আসার পথে রেঞ্জের মধ্যে আসামাত্রই মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা পদ্ধতিতে প্রচণ্ড বেগে তাদের ওপর আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়েন। চারদিকে খাল, ধানক্ষেত এবং মাঠভর্তি পানি থাকায় হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়। আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে গ্রামবাসীও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অংশগ্রহণ করে। পালাতে গিয়ে কয়েকজন হানাদার সদস্য গ্রামবাসীদের হাতে নিহত হয়। এ-যুদ্ধে ৯ জন পাকিস্তানি সৈন্য ও ৮ জন রাজাকার নিহত হয়। আমান গোল, শেরে গোল ও মানিক গোল নামে ৩ জন বেলুচ সৈন্য মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা এ-সময় ৩টি এলএমজি, ৬টি এসএমজি, ২টি মর্টার ও বেশকিছু গোলাবারুদ হস্তগত করেন। এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জেল আলী জামাদ্দার, আবদুর বর খান ও আনু মিস্ত্রী আহত হন। [মনিরুজ্জামান শাহীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!