কেওয়াটখালী রেলওয়ে কলোনি বধ্যভূমি (ময়মনসিংহ সদর)
কেওয়াটখালী রেলওয়ে কলোনি বধ্যভূমি (ময়মনসিংহ সদর) ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় কিলোমিটার পূর্বদিকে অবস্থিত। এটি ছিল মূলত একটি বিহারি অধ্যুষিত স্থান। এ কলোনিকে রাজাকার,আলশামস ও আলবদররা বিহারিদের সহায়তায় একটি বধ্যভূমিতে পরিণত করে। এখানে অসংখ্য মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন একটি বড় জংশন। এ স্টেশনে বাঙালিদের চেয়ে অবাঙালি বিহারি শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বেশি ছিল। রেলপথে যাতায়াতের সময় ভাষাগত কারণে এ বিহারিদের সঙ্গে পাকিস্তানি হানাদার সৈন্যদের সখ্য গড়ে ওঠে।
আলবদর, রাজাকার, আলশামস ও বিহারিরা এক সময় গণহত্যায় মেতে ওঠে। তারা মানুষ হত্যার জন্য ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের এ কলোনিকে বেছে নেয়। বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক ও নিরীহ মানুষদের এ কলোনিতে ধরে এনে নির্যাতনের পর হত্যা করা হতো।
৩০শে নভেম্বর গৌরীপুর থানার পলাশকান্দা গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ, মঞ্জুসহ অনেক গ্রামবাসীকে পাকসেনারা ধরে কেওয়াটখালী রেলওয়ে কলোনিতে নিয়ে আসে। তাদের হত্যার জন্য পাকসেনারা বিহারি আলশামস বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। দলের সবাই তখন অর্ধমৃত। তাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার জন্য হাত, পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়। কারো-কারো আঙ্গুল, কান ও লিঙ্গ কাটা হয়। কয়েকজনের চোখ তুলে নেয়া হয়। নির্যাতনের সময় বিহারিরা পৈশাচিক উল্লাসে মেতে উঠত। নির্যাতনের পর তাদের হত্যা করা হয়। [বিমল পাল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড