You dont have javascript enabled! Please enable it!

কুন্দনহাট গণহত্যা (বিরামপুর, দিনাজপুর)

কুন্দনহাট গণহত্যা (বিরামপুর, দিনাজপুর) সংঘটিত হয় সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে। এতে ১৩ জন লোক নিহত হয়।
কুন্দনহাট বিরামপুর উপজেলার ৫নং বিনাইল ইউনিয়নের একটি ছোট হাট, যা ১৯৭১ সালে জমজমাট ছিল। গত কয়েক বছরে ২-৩ কিলোমিটারের মধ্যে নতুন কয়েকটি হাট- বাজার গড়ে ওঠায় এখন এটি আগের মতো জমজমাট নেই। মুক্তিযুদ্ধকালে মোহনপুর, চৌঠা, মন্দিরা, করমপুর, আঁয়রা, আদাপুর, কল্যাণপুর, রামকৃষ্ণপুর, করনজী, হেরমা, চাপড়া, বানোড়া, ধনশাহ, মঙ্গলপুর, একুইড়, চাকুলসহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজন পণ্য কেনা-বেচার জন্য এ হাটে আসত। এখানে চাল, ডাল, শাক-সবজিসহ সব ধরনের কাঁচা পণ্য, বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কেনা-বেচা হতো। ঘটনার দিন এ হাটে কেনা-বেচার জন্য বহু মানুষ আসে। বিকেলে আছরের নামাজের সামান্য আগে হঠাৎ করে পাকিস্তানি সেনারা হাটে হামলা চালায়। তারা কেটরাহাট থেকে রওনা দিয়ে আঁয়ড়া মোড় হয়ে কুন্দনহাটের দিকে যায় এবং হাট থেকে ৪-৫শ গজ দূরে অবস্থান নিয়ে হাটের লোকজনের ওপর গুলি বর্ষণ করে। অকস্মাৎ গুলি বর্ষণে লোকজন প্রাণভয়ে এলোপাতাড়ি ছুটাছুটি শুরু করে। এ অবস্থায় ১৩ জন মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জনৈক তফিলউদ্দিন খাঁন ওরফে গোদো খাঁ কুন্দনহাট পুকুর (ফেসিকুড়ি পুকুর) সংলগ্ন একটি দোকান ঘরে লুকিয়ে থাকেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঐ দোকান ঘরটিসহ কয়েকটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তফিলউদ্দিন খাঁন পুড়ে মারা যান। আঁয়ড়া গ্রামের বছিরউদ্দিন মণ্ডল ও ময়েজউদ্দিন মণ্ডলও ঐ আগুনে পুড়ে মারা যান।
কুন্দনহাট গণহত্যায় নিহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা যায়, তারা হলেন- মো. ছকিনতুল্লাহ (৫২) (পিতা মো. কছিমুল্লাহ, আয়ড়া, ৫নং বিনাইল), টুরু মিয়া (মহিষাভাণ্ডা), করিম মিস্ত্রি (৫৫) (চৌঠা, ৫নং বিনাইল), আব্দুস সামাদ (২৬) (পিতা আবু বকর সিদ্দিক, কুন্দনহাট, ৫নং বিনাইল), তফিলউদ্দিন খাঁন ওরফে গোদো খাঁ (৫৭) (পিতা গনি মোহাম্মদ খান, মন্দিরা খানপাড়া, ৫নং বিনাইল), বছিরউদ্দিন মণ্ডল (আয়ড়া, ৫নং বিনাইল) ও ময়েজউদ্দিন মণ্ডল (আয়ড়া, ৫নং বিনাইল)। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!