কুণ্ডুপাড়া গণহত্যা (গলাচিপা, পটুয়াখালী)
কুণ্ডুপাড়া গণহত্যা (গলাচিপা, পটুয়াখালী) সংঘটিত হয় ৮ই মে। এতে ৮ জন নিরীহ গ্রামবাসী প্রাণ হারায়। সুতাবাড়িয়া গ্রামে গণহত্যা (৮ই মে) শেষে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা পার্শ্ববর্তী কুণ্ডুপাড়ায় (মাঝগ্রাম) যায়। সেখানেও সুতাবাড়িয়ার ন্যায় মেশিনগান চালিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে। বাড়িঘরগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সুতাবাড়িয়ায় গণহত্যার সংবাদ শুনে কুণ্ডুপাড়ার অনেকে অন্যত্র পালিয়ে যায়। তাই এখানে অনেকে প্রাণে বেঁচে যায়। এখানে ৮ জনকে হত্যা করা হয়। তাদের মধ্যে শান্তি রঞ্জন দাসকে মর্মান্তিকভাবে কুপিয়ে হত্যা করে তার লাশটি খণ্ডবিখণ্ড করে ফেলা হয়। তার স্ত্রীর ওপর চলে নির্যাতন। হানাদাররা হত্যা শেষে লাশগুলো টেনে-হিঁচরে কমলাকান্ত খালের দিকে নিয়ে যায়। সে-সময় নিহত নারায়ণ চন্দ্রের দুই মেয়ে বাবার লাশের জন্য কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। তারা করজোড়ে মিনতি জানায় তাদের বাবার লাশের শেষকৃত্য করবে বলে, কিন্তু সকল কাকুতি-মিনতি পায়ে ঠেলে হানাদাররা লাশগুলো খালে নিক্ষেপ করে।
কুণ্ডুপাড়া গণহত্যায় নিহত ৮ জনের মধ্যে ৬ জনের নাম- পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- শান্তি রঞ্জন দাস (৩৮) (পিতা নবদ্বীপ দাস, কুণ্ডুপাড়া, চিকনিকান্দি), উমা চরণ নাথ (৮০) (পিতা শ্রীনাথ দেবনাথ, ঐ), নারায়ণ চন্দ্র কুণ্ডু (৫০) (পিতা বনমালি কুণ্ডু, ঐ), লক্ষ্মণ কুণ্ডু (১৫) (পিতা নারায়ণ চন্দ্র কুণ্ডু, ঐ), মাখন কুণ্ডু (৭০) (পিতা অম্বিকা চন্দ্র কুণ্ডু, ঐ) এবং সুনিল কণ্ডু (১৮) (পিতা নারায়ণ কুণ্ডু, ঐ)। [মো. আ. হালিম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড