জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরােধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘােষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর এ রায় ঘােষণা করেন। রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউশন আনীত ১৪টি অভিযােগের মধ্যে ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর অভিযােগে মীর কাসেম আলী দোষী প্রমাণিত হয়েছে। প্রমাণিত অভিযােগগুলাের মধ্যে ২ নম্বর অভিযােগে তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযােগে তাকে ৭ বছর করে মােট ৪২ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ১৪ নম্বর অভিযােগ ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে । এই ৮টি অভিযােগে তাকে সর্বমােট ৭২ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ১১ ও ১২ নম্বর অভিযােগে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। ১১ নম্বর অভিযােগে রয়েছে কিশাের মুক্তিযােদ্ধা জসিমসহ ছয়জনকে আটক, নির্যাতন ও হত্যার অভিযােগ। এ অভিযােগে বিচারপতিগণ সর্বসম্মতিক্রমে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
১২ নম্বর অভিযােগে রয়েছে রঞ্জিত দাস ও টুন্টু। সেনকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযােগ। এ অভিযােগে বিচারকদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেয়া হয়।১১ ও ১২ নং অভিযােগ ছাড়া বাকি ১২টি অভিযােগই অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযােগ মীর কাসেমের বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনাদের সহযােগিতায় ছাত্রসংঘের বাছাই করা সদস্যদের নিয়ে গঠিত সশস্ত্র আলবদর বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার হিসেবে। মীর কাসেম আলী মানবতাবিরােধী অপরাধ ঘটায়, তা রায়ে প্রমাণিত হয়েছে। মীর কাসেম মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ছিলাে। সে ওই সময় চট্টগ্রাম। কলেজ শাখা ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি, চট্টগ্রাম শহর শাখার সভাপতি ছিলাে। পরবর্তীতে ৭১’ এর ৬ নভেম্বর পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের প্রাদেশিক কার্যকরী পরিষদের সদস্য এবং পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মীর কাসেম আলী ইসলামী ছাত্রসংঘের বাছাই করা সদস্যদের সমন্বয়ে সশস্ত্র আলবদর বাহিনী গঠন করে। সেই আলবদর বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে মীর কাসেম আলী চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরােধী অপরাধ সংঘটিত করে।
চট্টগ্রাম শহরের চামড়ার গুদাম, সালমা মঞ্জিল, ডালিম হােটেলসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে মীর কাসেম আলী তার সহযােগীদের নিয়ে আলবদর বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্র গড়ে তােলে। এসব নির্যাতন কেন্দ্রগুলােতে মানুষকে ধরে নিয়ে দিনের পর দিন নির্যাতন এবং হত্যাকাণ্ড ঘঠায়। মামলায় মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নুরুল ইসলামসহ প্রসিকিউশনের ২৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এরপর মীর কাসেম আলীর পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন তার ছােট বােন মমতাজ নুরুদ্দিনসহ তিনজন।
মানবতাবিরােধী অপরাধের এ মামলায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে ২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা মাে. নুরুল ইসলামসহ ২৪ জন সাক্ষী। তাদের মধ্যে ঘটনার অন্য ২০ সাক্ষী হলেন সৈয়দ মাে. এমরান, মাে. সানাউল্লাহ চৌধুরী, মুক্তিযােদ্ধা সাংবাদিক নাসিরুদ্দিন চৌধুরী, সুনীল কান্তি বর্ধন দুলাল, শহীদপুত্র শিবু দাস, মৃদুল কুমার দে, প্রদীপ তালুকদার, মুক্তিযােদ্ধা এস্কান্দার আলম চৌধুরী, মাে. সালাহউদ্দিন ছুটু মিয়া, মাে. জাকারিয়া, নাজিমুদ্দিন, মাে. হাসান (১), মাে. হাসান (২), ফয়েজ আহমেদ সিদ্দিকী, জুলেখা খান, মুক্তিযােদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরী, হাসিনা খাতুন, এসএম জামাল উদ্দিন, এস এম সরওয়ার উদ্দিন এবং লুৎফর রহমান ফারুক। আর জব্দ তালিকার তিন সাক্ষী হলেন চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরির বুক সর্টার কাউসার শেখ, বাংলা একাডেমির সহকারী গ্রন্থাগারিক এজাব উদ্দিন মিয়া এবং বাংলা একাডেমির প্রধান গ্রন্থাগারিক মােবারক মিয়া। ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর মীর কাশেমের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন। প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন। ২০১৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মীর কাশেমের মামলা দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করেন ট্রাইব্যুনাল-১।।৫ সেপ্টেম্বর হত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযােগ ও লুণ্ঠনের ১৪টি মানবতাবিরােধী অপরাধে অভিযুক্ত করে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে অভিযােগ (চার্জ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এর আগে ২১ আগস্ট অভিযােগ গঠনের শুনানি শেষ হয়।১৬ মে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল-মালুমসহ প্রসিকিউশন ১৪টি অভিযােগে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযােগ (ফরমাল চার্জ) ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন।
২৬ মে এ অভিযােগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। ২০১৩ সালের ২ মে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরােধী অপরাধের ১৪টি অভিযােগে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেন তদন্ত সংস্থা। এ তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে ট্রাইব্যুনালের আদেশে মীর কাসেম আলীকে ২০১২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ও ১২ নভেম্বর দু’দফা সেফ হােমে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তদন্ত সংস্থা। ২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরােয়ানা জারি করলে ওইদিন বিকেলে মতিঝিলে দৈনিক নয়া দিগন্ত কার্যালয়ের (দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশন) থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিকেল সােয়া চারটার দিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় ।
মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে যতাে অভিযােগ
মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে অভিযােগে বলা হয়েছে, কাসেম আলী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম কলেজে পদার্থ বিজ্ঞানের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলাে। সে ওই সময় চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলাে। একইসঙ্গে সে চট্টগ্রাম শহর শাখার সভাপতি ছিলাে। পরবর্তী সময়ে ১৯৭১ সালের ৬ নভেম্বর পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের প্রাদেশিক কার্যকরী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয় এবং পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মীর কাসেম আলী জামায়াতসহ অপরাপর রাজনেতিক দলগুলাের সহযােগিতায় ইসলামী ছাত্রসংঘের বাছাই করা সদস্যদের সমন্বয়ে সশস্ত্র আলবদর বাহিনী গঠন করে। সেই আলবদর বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে মীর কাসেম আলী স্বাধীনতাবিরােধী মূলধারার সঙ্গে একাত্ম হয়ে সারা বাংলাদেশ বিশেষ করে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরােধী অপরাধ সংঘটিত করে। চট্টগ্রাম শহরের দোস্ত মােহাম্মদ পাঞ্জাবি বিল্ডিং (চামড়ার গুদাম), সালমা মঞ্জিল, ডালিম হােটেলসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে মীর কাসেম আলী তার সহযােগীদের নিয়ে আলবদর বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্র গড়ে তােলে। এসব নির্যাতন কেন্দ্রগুলােতে বহু মানুষকে ধরে নিয়ে সে দিনের পর দিন নির্যাতন এবং অনেক লােককে হত্যা করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস) আইন’১৯৭৩ এর ৩ (২) (এ) (জি)/৪ (২) ধারায় মীর কাসেমের বিরুদ্ধে আনা ১৪টি অভিযােগের মধ্যে চট্টগ্রামের আসাদনগর ও পাঁচলাইশ এলাকায় আটজনকে নির্যাতনের পর হত্যা ও লাশ গুম এবং ৩৪ জনকে অপহরণের পর চট্টগ্রামের ডালিম হােটেলে আটকে রেখে নির্যাতনসহ মানবতাবিরােধী বিভিন্ন ঘটনার অভিযােগ উল্লেখ করা হয়েছে।
এসব অভিযােগের মধ্যে ১১ ও ১২ নম্বর অভিযােগ ছাড়া বাকি সব কটি অভিযােগেই অপহরণ এবং নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে। প্রথম অভিযােগে বলা হয়েছে, মীর কাসেমের নেতৃত্বে আলবদর বাহিনী ১৯৭১ সালের ৮ নভেম্বর ওমর-উল ইসলাম চৌধুরীকে অপহরণ করে। পরে কয়েক দফায় চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার ডালিম হােটেল, পাঁচলাইশ থানার সালমা মঞ্জিল এবং কোতােয়ালি থানার দোস্ত মােহাম্মদ পাঞ্জাবি বিল্ডিংয়ের চামড়ার গুদাম এবং পাঁচলাইশ থানার চাক্তাই সাম্পানঘাট নির্যাতন কেন্দ্রে নিয়ে নির্যাতনে আহত করা হয় তাকে। পরে জোর করে স্বাক্ষর রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।দ্বিতীয় অভিযােগে বলা হয়েছে, মীর কাসেমের নেতৃত্বে ১৯ নভেম্বর চাক্তাই থেকে। লুৎফর রহমান ফারুককে অপহরণ করে ডালিম হােটেলে ও সার্কিট হাউজে নিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং তার বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় সিরাজ (বর্তমানে মৃত) নামক অন্য একজনকেও নির্যাতনে আহত হন। লুৎফর রহমান ফারুককে পরে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানাে হয়। তৃতীয় অভিযােগে বলা হয়েছে, ২২ বা ২৩ নভেম্বর মীর কাশেমের নেতৃত্বে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে তার ডবলমুরিং থানার কদমতলির বাসা থেকে ধরে নিয়ে ডালিম হােটেলে নির্যাতন করা হয়।
চতুর্থ অভিযােগে বলা হয়েছে, ডবলমুরিং থানার আজিজ কলােনির বাসা থেকে সাইফুদ্দিন খানকে ধরে নিয়ে ডালিম হােটেল নির্যাতন কেন্দ্রে নির্যাতন করে আলবদর বাহিনী। পরে তাকে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানাে হয়। পঞ্চম অভিযােগে বলা হয়েছে, ২৫ নভেম্বর আনােয়ারা থানার আবদুল জব্বারকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে প্রথমে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে নির্যাতন করা হয়। পরে ডালিম হােটেলে মীর কাশেমের সামনে হাজির করা হয়। সেখানে নির্যাতন করা হয়। তাকে। ষষ্ঠ অভিযােগে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের একটি চায়ের দোকান থেকে হারুনুর রশিদকে ধরে নিয়ে ডালিম হােটেল এবং সালমা মঞ্জিল নির্যাতনকেন্দ্রে নির্যাতন করা হয়। সপ্তম অভিযােগে বলা হয়েছে, মীর কাসেমের নেতৃত্বে সাত/ আট যুবক ডবলমুরিং থানা থেকে সানাউল্লাহ চৌধুরী, হাবিবুর রহমান ও ইলিয়াসকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয় ডালিম হােটেলে। অষ্টম অভিযােগে বলা হয়েছে, ২৯ নভেম্বর রাতে অপহরণ করে ডালিম হােটেলে নিয়ে নির্যাতন করা হয় নুরুল কুদ্স, মােঃ নাসির ও নুরুল হাশিমকে। নবম অভিযােগে বলা হয়েছে, ২৯ নভেম্বর নুরুজ্জামান নাজিরবাড়ি থেকে সৈয়দ মম, এমরানসহ সাতজনকে অপহরণ করে ডালিম হােটেলে নিয়ে নির্যাতন চালানাে হয়। অন্য ছয়জন হচেছন এস এম জামাল উদ্দিন, এস এম সারওয়ার উদ্দিন, এস এম কামাল উদ্দিন, এস এম ওসমান, এস এম গােলাম কিবরিয়া ও সৈয়দ মােঃ গােলাম কিবরিয়া। দশম অভিযােগে বলা হয়েছে, ২৯ নভেম্বর মীর কাসেমের নির্দেশে গােলাম আলী নাজিরবাড়ি থেকে মােঃ জাকারিয়াসহ চারজনকে অপহরণ করে নিয়ে ডালিম হােটেলে নিয়ে নির্যাতন চালানাে হয়। অন্য তিনজন হচ্ছেন – মােঃ সালাউদ্দিন ওরফে ছুটু মিয়া, ইস্কেন্দার আলম চৌধুরী ও মােঃ নাজিম উদ্দিন।একাদশতম অভিযােগে বলা হয়েছে, রমজানের ঈদের পরে যেকোনাে দিন মীর কাসেমের নির্দেশে শহীদ জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে অপহরণের পর ডালিম | হােটেলে নিয়ে নির্যাতন চালানাে হয়। এতে জসিমসহ পাঁচজন শহীদ হন এবং পরে তাদের লাশ গুম করা হয়।দ্বাদশতম অভিযােগে বলা হয়েছে, মীর কাসেমের নির্দেশে নভেম্বর মাসের যেকোনাে একদিন হাজারী গলি থেকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয় জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, রঞ্জিত দাস লাতু ও টুন্টু সেন রাজুকে। এতে রঞ্জিত দাস লাতু ও টুন্টু সেন রাজু শহীদ হন এবং তাদের লাশ গুম করা হয়। নির্যাতনে গুরুতর আহত হন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
ত্রোদশতম অভিযােগে বলা হয়েছে, মীর কাসেমের নেতৃত্বে আলবদর বাহিনী ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে যেকোনাে একদিন সুনীল কান্তি বর্ধন দুলালকে অপহরণ করে। পরে কয়েক দফায় ডালিম হােটেল, সালমা মঞ্জিল এবং | দোস্ত মােহাম্মদ পাঞ্জাবি বিল্ডিংয়ের চামড়ার গুদাম এবং চাক্তাই সাম্পানঘাট নির্যাতন কেন্দ্রে নিয়ে নির্যাতনে আহত করা হয় তাকে। চতুর্দশতম অভিযােগে বলা হয়েছে, মীর কাসেমের নেতৃত্বে আলবদর বাহিনী ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে যেকোনাে একদিন গভীর রাতে নজির | আহমেদ চৌধুরী রােড থেকে নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ করে ডালিম হােটেলে নিয়ে নির্যাতন চালানাে হয়।
সূত্র : ফিরে-দেখা-৭১-যুদ্ধাপরাধীদের-বিচার-সুজন-হালদার