কাশিড়া যুদ্ধ (আক্কেলপুর, জয়পুরহাট)
কাশিড়া যুদ্ধ (আক্কেলপুর, জয়পুরহাট) ১৪ই ডিসেম্বর সংঘটিত হয়। এ-যুদ্ধে ৭ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা ৫টি অস্ত্র হস্তগত করেন। অপরদিকে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ৩ জন আহত হন। জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলা ১৩ই ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয়। কিন্তু ১৪ই ডিসেম্বর আক্কেলপুরের মুক্তিযোদ্ধাদের আবার অস্ত্র হাতে তুলে নিতে হয়। আক্কেলপুর উপজেলায় যে-কটি সম্মুখ যুদ্ধ হয়, তার মধ্যে কাশিড়ার সম্মুখ যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। ডিসেম্বর মাসের শুরুতেই সারাদেশে পাকিস্তানি হানাদাররা যৌথ বাহিনীর আক্রমণে পর্যুদস্ত হয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু হানাদাররা পালিয়ে যাওয়ার সময়ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ১৪ই ডিসেম্বর সকালবেলা জয়পুরহাটের দিক থেকে পালিয়ে যাওয়া পাকিস্তানি সৈন্যরা ক্ষেতলাল-আক্কেলপুরের মধ্য দিয়ে আদমদীঘির দিকে যাবার পথে এলোপাতাড়ি গুলি করে সাধারণ মানুষদের হত্যা করতে থাকে। আক্কেলপুরের মুক্তিযোদ্ধারা এ খবর পেয়ে দ্রুত প্রস্তুতি নিয়ে ছুটে আসেন। কমান্ডার নবীবুর রহমান, আব্দুল জলিল, আব্দুর রাজ্জাক দেওয়ান, আফজাল হোসেন, নজরুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন ও আজাদ আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তানি বাহিনীকে আক্রমণ করেন। কাশিড়া গ্রামের পূর্ব পাশের ফসলি মাঠে এ-যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পিছু ধাওয়া করেন। এ-যুদ্ধে ৭ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয় এবং ৫টি অস্ত্র উদ্ধার হয়। অপরদিকে যুদ্ধে একজন মুক্তিযোদ্ধা (চিয়ারি গ্রামের আইনউদ্দিন) শহীদ হন এবং আক্কেলপুরের ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। তাঁরা হলেন রামশালা গ্রামের আবুল আজাদ ও নূরল ইসলাম এবং চিয়ারি গ্রামের সেকেন্দার আলী। [রেহানা পারভীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড