You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.29 | কালির বাজার রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (ত্রিশাল, ময়মনসিংহ) - সংগ্রামের নোটবুক

কালির বাজার রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (ত্রিশাল, ময়মনসিংহ)

কালির বাজার রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (ত্রিশাল, ময়মনসিংহ) পরিচালিত হয় ২৯শে জুন। এতে মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারদের কেউ হতাহত হয়নি।
কালির বাজার ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী একটি বাজার। গ্রামের মধ্য দিয়ে চলে গেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ। এ গ্রামটির বর্তমান নাম ফাতেমানগর। স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর কমান্ডারের নেতৃত্বে বাজারে রাজাকারদের একটি ক্যাম্প স্থাপিত হয়। এতে সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। শুধু তাই নয়, ক্যাম্পের রাজাকাররা স্থানীয় মানুষদের ওপর নানা অত্যাচার- নির্যাতন চালাত।
মেঘালয়ের ডালু ক্যাম্প থেকে জুন মাসের শেষদিকে -মুক্তিবাহিনী-র ১২০ জনের একটি দল ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। গ্রুপ কমান্ডার জাবেদ আলীর নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর এ দল হালুয়াঘাট থানার পশ্চিম অংশ দিয়ে নালিতাবাড়ি হয়ে ময়মনসিংহ শহরের প্রায় ১০ মাইল পশ্চিমে ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে মুক্তাগাছা উপজেলার কাছাকাছি অবস্থান গ্রহণ করে। সেখানে অবস্থান নিয়েই কমান্ডার জাবেদ আলীর নির্দেশ অনুযায়ী কালির বাজার রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণের পরিকল্পনা নেয়া হয়। অপারেশন কমান্ডারের নির্দেশমতো গ্রুপ কমান্ডার মমতাজ উদ্দিন তাঁর দল নিয়ে ত্রিশাল থানার পূর্বদিক দিয়ে নৌকাযোগে ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে মরিচার চর গ্রামে অবস্থান গ্রহণ করেন। দুদিন রেকি করার পর নদী পার হয়ে কালির বাজারের দক্ষিণে রেলপথের কাছাকাছি হাইস্কুলে অবস্থানরত রাজাকার ক্যাম্পে চূড়ান্ত আক্রমণের সিদ্ধান্ত হয়। ২৯শে জুন মুক্তিযোদ্ধারা তিনদিক দিয়ে রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করেন। কিন্তু আক্রমণের পূর্বে রেলওয়ে স্টেশনের টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ব্যর্থ হওয়ায় কালির বাজারে রাজাকার আক্রমণের সংবাদ ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে অবস্থানরত পাকহানাদার বাহিনীর কাছে পৌঁছে যায়। হানাদার বাহিনীর একটি দল দ্রুত ট্রেনযোগে রাজাকারদের ক্যাম্পে চলে আসে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাল্টা আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ তীব্রতর করলেও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের সামনে টিকতে না পেরে অবস্থান পরিবর্তন করে নিরাপদ স্থানে চলে যান। যুদ্ধে কোনো পক্ষেই কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। [জগন্নাথ বড়ুয়া]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড