You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.03 | কালাসোনা যুদ্ধ (ফুলছড়ি, গাইবান্ধা) - সংগ্রামের নোটবুক

কালাসোনা যুদ্ধ (ফুলছড়ি, গাইবান্ধা)

কালাসোনা যুদ্ধ (ফুলছড়ি, গাইবান্ধা) সংঘটিত হয় ৩রা নভেম্বর। কোম্পানি কমান্ডার মাহবুব এলাহী রঞ্জুর নেতৃত্বে পাকসেনাদের সঙ্গে এ-যুদ্ধ হয়। তাঁর প্লাটুন কমান্ডাররা ছিলেন নুরুন্নবী সরকার, মবিনুল হক জুবেল, মকবুল হোসেন ও হোসেন আলী। এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের কালাসোনার চরে এ- যুদ্ধ হয় এবং ভোর থেকে শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত তা চলে। যুদ্ধে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং পাকসেনারা পালিয়ে যায়। বালাসীঘাটের কাছে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও মানস নদীর মাঝে সমান্তরালভাবে আরো একটি ছোট বাঁধ ছিল। ঘটনার দিন ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা ধানক্ষেতের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। পাকিস্তানি সেনারা ঐ ছোট বাঁধে অবস্থান নিয়েছিল। কৌশলগত দিক থেকে পাকিস্তানিরা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। এক সময় উভয় পক্ষে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় এবং দীর্ঘক্ষণ গুলি বিনিময় চলে। বেলা বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে সূর্যের উত্তাপ এবং রণাঙ্গনের উত্তাপ সমানভাবে বাড়তে থাকে। মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিম (পিতা দেলোয়ার হোসেন, পুনতাইর, গোবিন্দগঞ্জ) একটু সুবিধাজনক অবস্থানে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি পাঁজরে গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যান। সহযোদ্ধা মান্নান তাঁকে নিয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টাকালে ফজলুলের ঘাড়ে আরো একটি গুলি লাগে। তিনি পানির জন্য ছটফট করতে-করতে মৃত্যুবরণ করেন। মুক্তিযোদ্ধারা তখন মরিয়া হয়ে পাকিস্তানি বাহিনির ওপর আক্রমণ চালান। দুপুরের পরপরই হানাদাররা পিছু হটে। এ-যুদ্ধে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা অংশগ্রহণ করেন। শহীদ ফজলুল করিমের নামে কালাসোনার চরের নামকরণ করা হয় ফজলুপুর, যা বর্তমানে একটি ইউনিয়ন। [জহুরুল কাইয়ুম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড