You dont have javascript enabled! Please enable it!

কালকিনি ঠাকুরবাড়ি যুদ্ধ (কালকিনি, মাদারীপুর)

কালকিনি ঠাকুরবাড়ি যুদ্ধ (কালকিনি, মাদারীপুর) সংঘটিত হয় ৫ই নভেম্বর। এতে একজন নিরীহ গ্রামবাসী নিহত হয় এবং পাকসেনা ও রাজাকার-রা পালিয়ে যায়। কালকিনি উপজেলার সিডিখান গ্রামে আরোজ আলী হাওলাদারের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ক্যাম্প ছিল। এ ক্যাম্পের কমান্ডার ছিলেন এস্কেন্দার শিকদার। কমান্ডারের কাছে নভেম্বর মাসের প্রথমদিকে সংবাদ আসে যে, পালরদী নদীর পারে ঠাকুরবাড়ি নয়াকান্দি এলাকায় লুটতরাজ চালাতে ও ঘরবাড়িতে আগুন দিতে রাজাকার ও পাকসেনারা এখানে আক্রমণ করবে। এ সংবাদ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনা ও রাজাকারদের প্রতিহত করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন শরিফের নেতৃত্বে ২৫ জনের একটি অপারেশন দল গঠন করেন। মুক্তিযোদ্ধারা ঠাকুরবাড়ি ঘাটের পঞ্চাশ গজ দূরে রাস্তার পাশে বাংকার খুঁড়ে অবস্থান নেন। ৫ই নভেম্বর পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা মাদারীপুর থেকে লঞ্চে ঠাকুরবাড়ি নয়াকান্দি আক্রমণে আসে। আসার পথে তারা করিমগঞ্জ থেকে নদীর দুই পাড়ের বসতি লক্ষ করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে এনায়েতনগর ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী গ্রামের এক ব্যক্তি নিহত হয়।
পাকিস্তানি সেনাবোঝাই লঞ্চটি ঠাকুরবাড়ি ঘাটে পৌছামাত্র পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুদের ওপর গুলিবর্ষণ করেন। আক্রান্ত হয়ে হানাদার পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা পাল্টা গুলিবর্ষণ করতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে শত্রুরা পালরদী নদীর পশ্চিম পাড়ে লঞ্চ থেকে নেমে ঠেঙ্গামারা গ্রামের ভেতর দিয়ে মাদারীপুরে দিকে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে পাকসেনা ও রাজাকাররা পালিয়ে যাওয়ায় নিরীহ গ্রামবাসী ধ্বংসলীলা থেকে রক্ষা পায়। এদিন পথ চিনিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতা করে সিরাজুল ইসলাম, জুলফিকার আলী, খোকন, আমির হোসেন মোল্লা, সালাউদ্দিন হাওলাদার এবং আরো ৭-৮ জন রাজাকার। [বেনজীর আহম্মদ টিপু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!