কামারজানী গণহত্যা (গাইবান্ধা সদর)
কামারজানী গণহত্যা (গাইবান্ধা সদর) সংঘটিত হয় ২৭শে নভেম্বর। গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানী ইউনিয়নের গোঘাট ও কড়াইবাড়ি গ্রামে এ গণহত্যা সংঘটিত হলেও ইউনিয়নের নামে এর নাম হয় কামারজানী গণহত্যা। পাকিস্তানি হানাদাররা স্থানীয় রাজাকারদের সহয়াতায় এ গণহত্যা সংঘটিত করে। এতে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী প্রাণ হারায়।
২৭শে নভেম্বর রাজাকারদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাকিস্তানি সেনারা কামারজানীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এলাকায় অবস্থানরত একদল মুক্তিযোদ্ধাকে আক্রমণ করে। সেখানে দুপক্ষের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে ৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হলে মুক্তিবাহিনী পিছু হটে। এরপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী প্রতিশোধ নিতে পার্শ্ববর্তী দুটি গ্রাম গোঘাট ও কড়াইবাড়িতে ঢুকে সাধারণ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন চালায়। তারা দুই গ্রাম থেকে অনেককে ধরে বাঁধের পাশে দাঁড় করায়। তারপর তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে নিহত ৯ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। পাশে নৌকায় থাকা দুজন মাঝিকেও তারা গুলি করে হত্যা করে। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। নিহত গ্রামবাসীরা হলেন- উমেদ আলী (পিতা সোনাউল্যা, গোঘাট), ছাবেদ আলী (পিতা সোনাউল্যা, গোঘাট), ময়নাল আকালু (গোঘাট), মশিউর দেলোয়ার (গোঘাট), মহবত আলী (পিতা আছমত আলী, গোঘাট), ছালামত আলী (পিতা ময়েজ উদ্দিন, গোঘাট), আব্দুল কাদের (পিতা কেছমত আলী, গোঘাট), হাফেজ (গোঘাট) ও দসিজল (কড়াইবাড়ি)। এদের সকলকে পারিবারিকভাবে সমাহিত করা হয়। পরে নদীভাঙ্গনে সবার কবর বিলীন হয়ে যায়। [জহুরুল কাইয়ুম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড