You dont have javascript enabled! Please enable it!

কামালপুর যুদ্ধ (ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর)

কামালপুর যুদ্ধ (ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর) সংঘটিত হয় ২৯শে জুলাই। এতে ৭-৮ জন পাকসেনা নিহত হয়।
শাসিয়ালী যুদ্ধের দিন (২৯শে জুলাই) পাকবাহিনীর যে-দলটি পায়ে হেঁটে কড়ইতলীর পথে অগ্রসর হয়, সে দলটিকে হাবিলদার রশিদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করেন। রশিদের অধীনে ছিলেন ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের কাছে ছিল ২টি এলএমজি। পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় দেড় ঘণ্টা যুদ্ধ হয়। এক পর্যায়ে পাকবাহিনী তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে একটি গ্রুপ কামালপুর গ্রামে ঢুকে পড়ে, একটি গ্রুপ কড়ইতলী রাস্তায় চলে যায় এবং আর একটি গ্রুপ কড়ইতলী ধোপাবাড়িতে ঢুকে পড়ে। কামালপুরের গ্রুপটির সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর তখনো যুদ্ধ চলছিল। এদিকে হাবিলদার রশিদ গ্রুপের বুলেট প্রায় শেষ। তাই হাবিলদার রশিদ মুক্তিযোদ্ধাদের থেমে-থেমে গুলি করার নির্দেশ দিয়ে পাটোয়ারী বাজারে যাওয়ার রাস্তায় অবস্থান নেন। পাকবাহিনী কামালপুর পাটোওয়ারী বাড়ি ও আশেপাশে আগুন দেয়। তাদের তাণ্ডবে বহুলোক আহত হয়। ধোপাবাড়ির মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপটি ছিল ল্যান্স নায়েক ফারুকের নেতৃত্বে। ৭-৮ জন পাকসেনা ধোপাবাড়ির আখক্ষেতের মাচায় পজিশনে আছে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের আক্রমণ করলে ৩-৪ জন সঙ্গে-সঙ্গে নিহত হয়, বাকিরা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এখানে প্রায় আধঘণ্টা যুদ্ধ হয়। কিছুক্ষণ উভয় পক্ষ নীরব থাকে। এ অবস্থায় ল্যান্স নায়ক ফারুক পাকবাহিনীর অবস্থা জানার জন্য একটি নারকেল গাছের আড়ালে থেকে যেই উঠে দাঁড়িয়েছেন, অমনি পাকবাহিনী তাঁকে লক্ষ করে ব্রাশ ফায়ার করে। ফারুক চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর সহযোদ্ধারা সঙ্গে-সঙ্গে আক্রমণ করে বাকি পাকসেনাদের হত্যা করেন। আহত ফারুককে চিকিৎসার জন্য পানিআলা হেডকোয়ার্টার্সে পাঠানো হয়। সেখানে ডা. জয়নাল ও ডা. বদরুন্নাহার সারারাত ধরে চেষ্টা করে তাঁর শরীর থেকে বুলেট বের করলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শেষ পর্যন্ত তিনি মারা যান। ফারুক ছিলেন হুগলির পাটোয়ারী বাড়ির সন্তান। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করে। [দেলোয়ার হোসেন খান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!