কাটানিশা গণহত্যা (কুমিল্লা আদর্শ সদর)
কাটানিশা গণহত্যা (কুমিল্লা আদর্শ সদর) ১৭ই জুন সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় ৪ জন মানুষ শহীদ হন।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর রেলস্টেশনের পূর্ব দিকে কয়েকটি বাড়ি নিয়ে কাটানিশা গ্রাম। মুক্তিযোদ্ধারা ছদ্মবেশে কাটানিশা গ্রামে এসে মাত্র কয়েকশ গজ উত্তরে সদর রসুলপুর পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পে চোরাগুপ্তা হামলা চালান। ১৬ই জুন মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল রাতভর হাজী আবদুল গফুর মিয়ার বাড়িতে অবস্থান করে হানাদার বাহিনীকে আক্রমণ করেন এবং রাতের আঁধার থাকতেই তাঁরা গ্রাম ছেড়ে চলে যান। আত্মীয়-স্বজনদের শত অনুরোধ সত্ত্বেও হাজী আবদুল গফুর বাড়িতে থেকে গিয়েছিলেন। ১৭ই জুন বিকেলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিশাল বহর রসুলপুরে আসে। তারা হাজী আবদুল গফুর মিয়ার বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে থাকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আবদুল গফুরের দেহ। ঘাতকের গুলি চৌচির করে দেয় আসমতের বুক। আবদুল মজিদ নামে অপর একজন দ্রুত দরজা বন্ধ করে দেন। তিনি তার নিজ ছেলে দুটিকে আগলে ধরেন। পাকিস্তানি বাহিনী টেনে-হিঁচড়ে আবদুল মজিদকে তার সন্তানদেরসহ বের করে এনে রাইফেল দিয়ে পেটাতে পেটাতে পুকুরে ফেলে দেয়। আবদুল মজিদ পাড়ের দিকে যেতে চেষ্টা করেন। হানাদার বাহিনীর গুলিতে বিদ্ধ হয়ে একটি বাচ্চা ছিটকে পড়ে কাদা-পানিতে। অন্য ছেলেটি লুকিয়েছিল পাশের ঝোপে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আবদুল মজিদের দেহ নিথর হয়ে যায়। বাড়ির কাজের লোকটিকেও হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। এভাবে বাড়ির ৪ জন সেদিন হানাদার বাহিনীর গণহত্যার শিকার হন। [মামুন সিদ্দিকী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড