You dont have javascript enabled! Please enable it!

কাজীর দিঘির পাড় যুদ্ধ (রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর)

কাজীর দিঘির পাড় যুদ্ধ (রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর) সংঘটিত হয় ১০ই সেপ্টেম্বর। রামগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের এ দেশীয় দোসর -রাজাকার- বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এ-যুদ্ধ হয়। এতে শত্রুপক্ষের কয়েকজন নিহত ও আহত হয়। অপরপক্ষে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
ঘটনার দিন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবর আসে যে, পাকবাহিনী ও রাজাকাররা বিরাট একটি টহল দল নিয়ে কালীবাজার সমিতির হাট মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প আক্রমণ করবে। আরো খবর আসে যে, তারা গাড়িভর্তি রসদ নিয়ে রামগঞ্জ আসবে। এ খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ঐদিন ভোরবেলা বিজয়নগর এসে জড়ো হন এবং মীরগঞ্জ, কাফিলাতলী ও কাজীর দিঘির পাড় এলাকায় অবস্থান নেন। এ খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা হামেদ রাব্বী ও রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী তাঁদের গ্রুপ নিয়ে দ্রুত কাজীর দিঘির পাড়ে চলে যান। পাকসেনা ও রাজাকাররা এসে কাজীর দিঘির পাড় এলাকায় মসজিদ ও মাদ্রাসায় ঢুকে পড়ে। এ সুযোগে মুক্তিযোদ্ধারা মসজিদের তিন দিক থেকে ফায়ার শুরু করেন। এতে শত্রুপক্ষের কয়েকজন নিহত ও আহত হয়। রাজাকাররা মসজিদের জানালা দিয়ে গুলি করছিল। মুক্তিযোদ্ধারা সুবিধা করতে পারছিলেন না। মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইলের হাতে ছিল একটি গ্রেনেড। তিনি এক হাতে রাইফেল রেখে আরেক হাতে গ্রেনেডটি মুখ দিয়ে খুলছিলেন। এমন সময় শত্রুপক্ষের একটি গুলি তাঁর শরীরে এসে বিদ্ধ হয়। মুক্তিযুদ্ধা আবুল খায়ের সঙ্গে-সঙ্গে গুলিবিদ্ধ ইসমাইলকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে উত্তর দিকে নেয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। তখনো যুদ্ধ চলছিল। ইসমাইলের পিতাও তখন যুদ্ধে লড়ছিলেন। পুত্রের শহীদ হওয়ার খবর পেয়েও তিনি তাঁর অবস্থান থেকে শত্রুপক্ষের দিকে গুলি ছোড়া অব্যাহত রাখেন। এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের আরো ২ জন সদস্য শহীদ হন। এরই মধ্যে লক্ষ্মীপুর থেকে পাকসেনাদের একটি উদ্ধারকারী দল এসে তাদের নিহত ও আহতদের নিয়ে লক্ষ্মীপুরের দিকে চলে যায়। এ-যুদ্ধে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হলেও শত্রুবাহিনী বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। [মো. ফখরুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!