You dont have javascript enabled! Please enable it!

কাঞ্চননগর গণহত্যা (ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম)

কাঞ্চননগর গণহত্যা (ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ২৩শে নভেম্বর। এতে ১৩ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন। ঘটনার দিন সকাল ১১টার দিকে পাকিস্তানি হানাদারদের এক বিশাল বাহিনী কাঞ্চননগর গ্রামে হামলা করে। তারা গ্রামে ঢুকে কাঞ্চননগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজল বারী ও তাঁর ছোটভাই রশিদ আহমদকে ধরার জন্য তাদের বাড়ি ঘেরাও করে। এ সময় হানাদারদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু রাজাকার- ও আলবদর বাহিনীর সদস্যও ছিল। কিন্তু এর আগেই ফজল বারী ভারতে এবং তার ছোটভাই রশিদ আহমদ অন্যত্র চলে যান। হানাদাররা চেয়ারম্যানের ঘরে ঢুকে তাদের খোঁজ করে না পেয়ে বাড়ির উঠানে এসে দাঁড়ায়। তারপর তারা বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক লোককে ধরে এনে ফজল বারীর কথা জিজ্ঞেস করে। তারা তাদের শাসিয়ে বলে যে, চেয়ারম্যানের অবস্থানের সঠিক তথ্য না দিতে পারলে কারো রেহাই নেই। কিন্তু ধৃত সবারই এক কথা, তারা চেয়ারম্যানের ব্যাপারে কিছুই জানে না। তখন হানাদার বাহিনীর সৈনিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ফজল বারীর লোক মনে করে ধৃতদের মধ্য থেকে কম বয়সী ৩ জনকে হাত-পা বেঁধে ফজল বারীর বসতঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর হানাদাররা চেয়ারম্যানের দালান ঘর, কাচারি ঘর, খড়ের গাদা ও রান্নাঘরে গান পাউডার ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে হাত-পা বাঁধা তিন যুবক জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যায়। নিহতরা হলেন- জাকির হোসেন (পিতা আবদুল কাদির), সফিউল আলম (পিতা ছৈয়দুর রহমান) ও মোহাম্মদ সোলায়মান (পিতা বেলাল সিকদার)। এ ঘটনার পর হানাদার বাহিনীর সদস্য ও রাজাকার-আলবদরা এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করতে-করতে চেয়ারম্যান বাড়ির পূর্বদিকে মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাকের বসতঘরে আগুন দেয়। হানাদাররা সেদিন এ গ্রামের পঞ্চাশটি বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনা চলাকালে হানাদার বাহিনীর এলোপাথাড়ি গুলিতে প্রাণ হারায় হাজেরা খাতুন (পিতা ওমদা মিয়া), নুর জাহান (পিতা আহমদ হোসেন), হেদায়েতুল হক, নুরুল ইসলাম, ফকির মোহাম্মদ, ইদ্রিস আলমসহ মোট ১০ জন। শহীদদের স্মরণে গোমস্তা পুকুরপাড়ে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। [জামাল উদ্দিন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!