You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক কাজী আব্দুস সাত্তার - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক কাজী আব্দুস সাত্তার

কাজী আব্দুস সাত্তার, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৩) বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বৈমানিক। তিনি ১৯৪৩ সালের ৬ই জানুয়ারি পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার সুটিয়াকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কাজী আব্দুর রউফ এবং মাতার নাম নূরজাহান বেগম। তিনি ১৯৫৭ সালে খুলনার সেন্ট জোসেফ স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৬০ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ)-এ পাইলট হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি চাকরি ছেড়ে পালিয়ে আসেন। এরপর তিনি ভারতের নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি ঘন বৃক্ষরাজিতে পূর্ণ এক পাহাড়ি এলাকায় ডাকোটা বিমান নিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণে তিনি রাতের আঁধারে আধুনিক দিকদর্শন যন্ত্র ছাড়াই বিমান চালনায় এবং শত্রুর রাডার ফাঁকি দিয়ে মাত্র ২০০ ফুট উচ্চতায় বিমান নিয়ে উড়ে যাবার কৌশল আয়ত্ত করেন। ডাকোটা প্লেন নিয়ে তাঁর তেজগাঁও বিমান বন্দর আক্রমণের কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে অভিযান করা হয়নি। পরবর্তীতে ডাকোটা বিমান মুক্তিবাহিনীর পরিবহন বিমান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মুক্তিবাহিনীর উপপ্রধান এ কে খন্দকার দুবার ঐ বিমানে করে রণাঙ্গন পরিদর্শন করেন। তখন তিনি দক্ষতার সঙ্গে বিমান পরিচালনা করে তাঁকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে নিয়ে যান। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কাজী আব্দুস সাত্তারকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি তিনি বাংলাদেশ বিমানের উদ্বোধনী ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন ছিলেন। ২০০০ সালে বাংলাদেশ বিমানের ডিসি-১০ প্লেনের ক্যাপ্টেন হিসেবে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সাল থেকে তিনি ভ্রমণ কথা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, রাজনীতি ও শিল্প সমালোচনা বিষয়ে লেখালেখি শুরু করেন। তিনি ২ কন্যা ও ২ পুত্র সন্তানের জনক। [জেবউননেছা]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড