You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক কাজী মো. আকমল আলী - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক কাজী মো. আকমল আলী

কাজী মো. আকমল আলী, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪১) সুবেদার মেজর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪১ সালের ১০ই এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের যশাতুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কাজী আকামত আলী, মাতার নাম মরিয়ম খাতুন। ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে কাজী মো. আকমল আলী ৩য়। তিনি রতনপুর হাইস্কুলে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন।
কাজী মো. আকমল আলী ১৯৬১ সালে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্- এ যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে তিনি ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্-এর ২নং উইং-এ ময়মনসিংহের খাসডহরে কর্মরত ছিলেন। ২৬শে মার্চ রাতে অবাঙালি ইপিআরদের সঙ্গে তাঁদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে বহু অবাঙালি ইপিআর সদস্য নিহত ও ৭ জন বন্দি হয়। কর্নেল (তখনকার র্যাংক) কে এম সফিউল্লাহ, বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে জয়দেবপুর সেনানিবাস থেকে বিদ্রোহ করে ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্যরা ময়মনসিংহে আগমন করলে কাজী মো. আকমল আলী তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে তিনি কে এম সফিউল্লাহর নেতৃত্বে ‘এস’ ফোর্সের অধীনে পাঁচদোনা, নরসিংদী জেলার মনোহরদীসহ বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ২৯শে এপ্রিল সংঘটিত নরসিংদী জেলার পাঁচদোনা যুদ্ধে কাজী মো. আকমল আলী অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন। ১লা সেপ্টেম্বর মনোহরদী হাসপাতালে স্থাপিত পাকবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণে তিনি বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এ-যুদ্ধে অর্ধশতাধিক পাকিস্তানি সেনা নিহত হয় এবং ৪ জন পাকসেনাকে মুক্তিযোদ্ধারা বন্দি করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কাজী মো. আকমল আলীর পদবি ছিল নায়েক সুবেদার।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বাংলাদেশ সরকার নায়েক সুবেদার কাজী মো. আকমল আলীকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। ১৯৮০ সালে তাঁকে সুবেদার মেজর পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মো. আকমল আলী ১৯৮৪ সালে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর স্ত্রীর নাম মোছা. খোদেজা বেগম। এ দম্পতি ৫ পুত্র সন্তানের জনক-জননী। [শফিউদ্দিন তালুকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড