You dont have javascript enabled! Please enable it!

কাজীপুর গণকবর (গাংনী, মেহেরপুর)

কাজীপুর গণকবর (গাংনী, মেহেরপুর) মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় অবস্থিত। এর অবস্থান গাংনী উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে সীমান্তবর্তী কাজীপুর গ্রামের ফাঁকা মাঠের ভেতর। ১৫ই আগস্ট ৩ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও ৩ জন সাধারণ মানুষের মরদেহ এ মাঠে সমাহিত করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার পর ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন কাজীপুর গ্রামের অধিকাংশ মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে প্রাণের ভয়ে ভারতের ফুলবাড়িসহ বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় নেয়। কাজীপুরের বিপরীতে ভারতীয় ফুলবাড়ি গ্রামে শরণার্থী শিবির-, যুব অভ্যর্থনা কেন্দ্র এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একশন ক্যাম্প স্থাপিত হয়। এখান থেকে প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নানাবিধ যুদ্ধতৎপরতায় অংশ নিয়ে কাজীপুর হয়ে আবার ফিরে যেতেন ফুলবাড়ি ক্যাম্পে। কাজীপুরের পার্শ্ববর্তী সাহেবনগর গ্রামের আবু বকরের বাড়িতে কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্যের আগমনের কথা রয়েছে মর্মে সংবাদ দিয়ে রাজাকার- নিজাম উদ্দীন ফুলবাড়ি একশন ক্যাম্পের ৮ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ডেকে এনে সাহেবনগরের সালাম সর্দারের বাড়িতে আশ্রয় দেয়। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক পাকিস্তানি সৈন্যরা এসে ঐ বাড়ির জানালা দিয়ে গুলি করে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা নায়েব সুবেদার আবুল কাশেম, হাবিলদার আব্দুস সালাম এবং সিপাহি আসাদুজ্জামানকে হত্যা করে। গুরুতর আহত হন সিপাহি সানোয়ার হোসেন। সিপাহি একরাম হোসেন ধরা পড়েন। নূরুল ইসলামসহ ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। শহীদ তিনজনের মরদেহ ঘরের মধ্যে থাকা অবস্থায় ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এ সময় হানাদারদের আক্রমণে ৩ জন সাধারণ মানুষ নিহত হন।
পরের দিন ১৬ই আগস্ট ফুলবাড়ি ক্যাম্প থেকে মুক্তিযোদ্ধারা এসে অগ্নিদগ্ধ ৩ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং ৩ জন সাধারণ মানুষের লাশ উদ্ধার করে কাজীপুর মাঠে গণকবরে সমাহিত করেন। গণকবরের গায়ে শহীদদের নাম মুদ্রিত আছে। [রফিকুর রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!