কাগইল জমিদার বাড়ি গণহত্যা (গাবতলী, বগুড়া)
কাগইল জমিদার বাড়ি গণহত্যা (গাবতলী, বগুড়া) সংঘটিত হয় ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে। এ গণহত্যায় ১২ জন গ্রামবাসী শহীদ হন।
কাগইল জমিদার বাড়ির তিনতলা কাচারিতে মুক্তিযোদ্ধারা আশ্রয় নিয়েছে – রাজাকারদের মাধ্যমে এরূপ সংবাদ পেয়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের সহায়তায় খুব সকালে এখানে প্রবেশ করে। তারা গ্রামের চারপাশ ঘিরে ফেলে এবং স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় এলাকার মানুষজনকে ধরে নিয়ে আসে। তাদের সবাইকে কাগইল গোবিন্দ মন্দিরের পাশে একত্রিত করে নির্মম নির্যাতন চালায়। এরপর তারা ১২ জনকে এক সঙ্গে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। গণহত্যার শিকার অধিকাংশই ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বী। পাকিস্তানি বাহিনী চলে গেলে এলাকার মানুষজন তাদের গণকবরে সমাহিত করে। গণহত্যার সঙ্গে পাকিস্তানি সৈন্যরা জমিদার বাড়িসহ আশপাশের বাড়িঘরে লুণ্ঠন চালায় এবং আগুন দেয়। ভণ্ডিল মহন্ত নামে এক ব্যক্তি পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে ধরা পড়ে ধস্তাধস্তি করে পালানোর চেষ্টা করে। সৈন্যরা তাকে ধরে কাঁঠাল গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে এবং শেষে গুলি করে হত্যা করে। তার বুকে তারা লিখে দেয় ‘পাকিস্তানের শত্রু’। অখীল রায় চৌধুরী নামে অপর একজনকে প্রথমে ছুরি দিয়ে জবাই এবং পরে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। নরেন্দ্র নাথ রায় চৌধুরীর ছেলে দিলীপ রায় চৌধুরীকে প্রথমে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে অন্যান্যদের সঙ্গে তাকেও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ গণহত্যায় শহীদ অন্য কয়েকজন হলেন— সুধীর মহন্ত (বৈরাগী), যোগেন্দ্র নাথ মজুমদার, সুপদ নন্দী, তারাপদ রায় চৌধুরী, জিগেন্দ্র নাথ মণ্ডল, বুদু মহন্ত, নগেন্দ্ৰ নাথ দাস, পলানু চন্দ্র দাস ও মনোরঞ্জন চন্দ্র দাস। [আহমেদ শরীফ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড