কাঁঠালবাড়ি বধ্যভূমি (কুড়িগ্রাম সদর)
কাঁঠালবাড়ি বধ্যভূমি (কুড়িগ্রাম সদর) কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় অবস্থিত। এখানে বহু মানুষকে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়।
কুড়িগ্রাম সদরের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ তৎপরতা ছিল। থানা আওয়ামী লীগ-এর সভাপতি সৈয়দ এক্সেন আলীর বাড়ি ছিল এখানেই। মুক্তিযোদ্ধারা প্রায়ই আক্রমণ চালিয়ে রাজাকার- ও পাকিস্তানিদের তটস্থ করে তুলতেন। এছাড়া পাশে ধরলা নদীর ওপারের মুক্তাঞ্চল থেকেও বিভিন্ন সময়ে তাঁরা এসে অপারেশন চালাতেন। মুক্তিযোদ্ধাদের তৎপরতা দমনের নামে ৯ই জুন পাকসেনারা কাঁঠালবাড়ির চেয়ারম্যান সৈয়দ আজাদ বক্ত আলী, তার পুত্র সৈয়দ বক্ত আলী, শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান পনিরউদ্দিন ও তার পুত্র তাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ দালালের সহযোগিতায় কাঁঠালবাড়িতে এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালায়। এতে ৩৫ জন এলাকাবাসী নিহত হয়। শুধু ৯ই জুন পাকবাহিনী কাঁঠালবাড়িতে অপারেশন চালায় তা নয়, এর আগে ও পরেও বহুবার তারা নৃশংসতা চালিয়েছে। পাকবাহিনী জুলাই মাসের মাঝামাঝি দালাল মতিয়ার রহমান (কুড়িগ্রাম পল্লী বিদ্যুতের সামনের বাড়ি)-এর সহায়তায় মোহাম্মদ আনছার আলী এবং আনছার চৌকিদারকে নিজ বাড়ির সামনে হত্যা করে। পাকিস্তানি সৈন্যরা যতবার কাঁঠালবাড়ি এসেছে ততবারই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। হত্যার পর লাশগুলো উন্মুক্ত স্থানে ফেলে রেখে যেত। দাফন করার সুযোগও ছিল না। সমগ্র কাঁঠালবাড়ির মাটিই এক বধ্যভূমিতে পরিণত হয়। [এস এম আব্রাহাম লিংকন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড