কাকড়াবুনিয়া গণহত্যা (মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী)
কাকড়াবুনিয়া গণহত্যা (মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী) ২২শে আগস্ট সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত এ গণহত্যায় ১৪ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ৫ কিমি দক্ষিণে পায়রা নদীর পাড়ে কাকড়াবুনিয়া গ্রামের অবস্থান। মুক্তিযুদ্ধকালে পায়রা নদীতে পাকিস্তানি সৈন্যরা সব সময় চলাচল করত। নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকা ও গ্রামটি হিন্দু অধ্যুষিত হওয়ার কারণে কাকড়াবুনিয়া গ্রামটি সহজেই হানাদার বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। ২৩শে আগস্ট একদল পাকিস্তানি সৈন্য লঞ্চযোগে পায়রা নদীতে এসে লঞ্চটি নদীর মাঝখানে রেখে স্পিড বোটযোগে নদী সংলগ্ন ছোট খালে প্রবেশ করে। খালে মাছ ধরার জন্য স্থানীয় কয়েকজন জেলে ২টি নৌকায় অবস্থান করছিল। কোনোরকম উস্কানি ছাড়াই হানাদার বাহিনী নৌকায় থাকা সকল জেলেকে গুলি করে হত্যা করে খালে ভাসিয়ে দেয়। সন্ধ্যার দিকে হানাদার বাহিনীর দোসর ফোরকান মল্লিক (২৫)-এর দেখানো পথে পাকবাহিনীর সদস্যরা ৪টি দলে বিভক্ত হয়ে কাকড়াবুনিয়া গ্রামে প্রবেশ করে ত্রাস সৃষ্টি করে। তারা মণীন্দ্র গোলদারের বাড়িসহ ১৪টি ঘরে আগুন দেয়। এ-সময় তারা গোলদার বাড়ির ৬-৭ বছরের একটি শিশুকে গুলি করে হত্যা করে। কাকড়াবুনিয়া গণহত্যায় ১৪ জন মানুষ শহীদ হন। তাদের মধ্যে ৪ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- বেতাগীর সনৎ কুমার হালদার (৬৫) (পিতা অনাথ হালদার), কাকড়াবুনিয়ার সন্তোষ গোলদার (৫৮), হাতেম হাওলাদার (৫৫) (পিতা জোনাব আলী) ও মোহন মৃধা (৩০) (পিতা এরশাদ আলী মৃধা)। এ গণহত্যায় মণীন্দ্র গোলদার আহত হয়ে বেঁচে যান। পাকিস্তানি সৈন্যরা এ-সময় গ্রামের ৩ জন নারী আলেয়া (২৭), রাবেয়া (২৫) ও সোনা লক্ষ্মী (২০)-কে ধরে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে। [ইব্রাহীম খলিল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড