কাইক্যার চর গণহত্যা (কুমিল্লা আদর্শ সদর)
কাইক্যার চর গণহত্যা (কুমিল্লা আদর্শ সদর) ১১ই জুন সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় ৭ জন মানুষ শহীদ হন।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নের ভুবনঘর গ্রামের একটি পাড়া কাইক্যার চর। রসুলপুর রেলস্টেশন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পূর্ব দিকে গ্রামটির অবস্থান। পাকিস্তানি বাহিনী ভুবনঘর গ্রামের পাশে ঘুংঘুর নদীর ওপর সুইস গেট সংলগ্ন স্থানে ক্যাম্প স্থাপন করলে গ্রামবাসী ভয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে চলে যায়। ১১ই জুন পাকিস্তানি বাহিনী কাইক্যার চর গ্রাম আক্রমণ করে। গ্রামের মুশকত আলী তার স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে নিয়ে আগেই ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। মুশকত আলী শিশুপুত্রের জন্য দুধ নিতে বাড়ি এসেছিলেন। হঠাৎ রসুলপুর থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ গ্রামের দিকে আসতে থাকে এবং গুলি বর্ষণ শুরু করে। মুশকত আলী প্রাণপণে সীমাস্তবর্তী একটি গ্রামে আশ্রয় নেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী চলে গেলে বাড়িতে ফিরে দেখেন পুরো বাড়ি আগুনে জ্বলছে। বাড়িতে অবস্থানকারী ৭ জনই হত্যার শিকার হন। তারা হলেন- মুশকত আলীর মা আমেনা বেগম (৫৮), সহোদর সুলতান আহমদ (২৫), চাচাতো ভাই আবদুল ওহাব (২৫) ও নওয়াব মিয়া (৩২), তাদের মা মঞ্জুরেন্নেছা (৫০), চাচি ও নওয়াব মিয়ার মামাতো ভাই বাদশা মিয়া (২৭)। মাওলানা কাজী আবদুল মালেকের সহায়তায় লাশগুলোকে পুকুরের পূর্বপাড়ে গণকবরে সমাহিত করা হয়। গণকবরে শহীদদের নাম সংবলিত একটি স্মৃতিফলক রয়েছে। [মামুন সিদ্দিকী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড