কাইফি আজমী
কাইফি আজমী, পদ্মশ্রী (১৯১৯-২০০২) ভারতের কবি ও গীতিকার। তিনি ১৯১৯ সালের ১৪ই জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম সাঈদ আক্তার হোসাইন রিজভী তবে তিনি কাইফি আজমী নামে পরিচিত ছিলেন। ভারতীয় সিনেমা জগতে উর্দু সাহিত্যের ধারা প্রবর্তনের জন্য তিনি সর্বদাই স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ভারত ছাড় আন্দোলনের (১৯৪২) সময় তিনি শিক্ষা বর্জন করেন। তিনি ১৯৪৫ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য পদ লাভ করেন। এরপর পুরোপুরি মার্কসবাদের সমর্থকে পরিণত হন। তিনি প্রোগ্রেসিভ রাইটারস্ মুভমেন্টে যোগদান করেন এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হন। তিনি দলীয় পত্রিকা কওমী জং-এ নিয়মতি লিখতেন। তাঁর কবিতায় তিনি অধিকারবঞ্চিত জনগণের শোষণের চিত্র তুলে ধরতেন। এর মাধ্যমে তিনি চলমান সমাজব্যবস্থাকে ভেঙ্গে দিতে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতেন। তাঁর প্রথম কবিতার সংগ্রহ ঝংকার ১৯৪৩ সালে প্রকাশিত হয়।
আজমী চলচ্চিত্রে গীতিকার, লেখক ও অভিনেতা হিসেবে কাজ করতেন। তিনি ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার, উত্তর প্রদেশ উর্দু একাডেমি পুরস্কার, সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার লাভ করেন। আজমী ২০০২ সালের ১০ই মে মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় জনগণের মধ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনসমর্থন সৃষ্টিতে কাইফি আজমী তাঁর লেখনী দ্বারা বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কবিতা লেখেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালের ২০শে অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার কাইফি আজমী, পদ্মশ্রী-কে। মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করে। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড