করফা গণহত্যা (স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর)
করফা গণহত্যা (স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর) সংঘটিত হয় ২৪শে মে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-রা এদিন ১৬ জন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে।
২৪শে মে দৈহারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ. জব্বারের সহযোগিতায় পাকিস্তানি সৈন্যরা হিন্দু অধ্যুষিত করফা গ্রাম আক্রমণ করে। গ্রামে প্রবেশ করে তারা সাধারণ মানুষদের হত্যা করা শুরু করে। এ-সময় রাজাকার বাহিনীর সহায়তায় তারা ব্যাপক লুটতরাজ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করবে এ শর্তে ৩ হাজার টাকা রাজাকারদের হাতে তুলে দেন চণ্ডীচরণ হালদার। কিন্তু রাজাকাররা ওয়াদা রক্ষা না করে পাশের জঙ্গল থেকে চণ্ডীচরণ হালদারকে ধরে নিয়ে আসে। তাঁর সঙ্গে রক্ষিত ২০ হাজার টাকাও তারা ছিনিয়ে নেয়। চণ্ডীচরণ হালদার এ-সময় হাত জোড় করে প্রাণ ভিক্ষা চান। তাকে হাত জোড় করা অবস্থায় হানাদাররা গুলি করে হত্যা করে। পাকসেনা ও রাজাকাররা চলে গেলে দেশলাইয়ের কাঠি জ্বেলে বাবার মুখাগ্নি করে পুত্র সুরেন্দ্রনাথ। এরপর তাঁকে মাটিচাপা দেয়া হয়।
করফা গণহত্যায় ১৬ জন মানুষ শহীদ হন। তাদের মধ্যে ১৫ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- করফা গ্রামের চিত্তরঞ্জন রায় (পিতা মুকুন্দ রায়), অনন্ত বাড়ৈ (পিতা দ্বারিকানাথ বাড়ৈ), চন্দ্রকান্ত বাড়ৈ (পিতা মহেন্দ্র বাড়ৈ), উপেন্দ্র হালদার, হরেন্দ্রনাথ বৈরাগী, মনোরঞ্জন গাইন (পিতা কৈলাস গাইন), পাগলা বৈরাগী (পিতা রামচরণ বৈরাগী), জিতেন ঢালী (পিতা রামেশ্বর ঢালী), মাখন ঢালী (পিতা রামেশ্বর ঢালী), চণ্ডীচরণ হালদার (পিতা রামকুমার হালদার), কার্তিক ঘরামী (পিতা মহেশ ঘরামী), বিপিন বিহারী হালদার (পিতা রাজকিশোর হালদার), মণীন্দ্রনাথ হালদার (পিতা ললিত হালদার), অনন্ত হালদার (পিতা দুর্গাচরণ হালদার) ও আ. মজিদ (পিতা এনছার উদ্দিন হাওলাদার, সারেংকাঠি)। [হাবিবুল্লাহ রাসেল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড