কধুরখীল গণহত্যা
কধুরখীল গণহত্যা (বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ৩১শে অক্টোবর। এদিন পাকবাহিনী ও রাজাকাররা ২০ জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করে।
ঘটনার দিন ভোরে ক্যাপ্টেন করিমের নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা মধ্যম কধুরখীলের নাপিতের ঘাটা ও দক্ষিণ পাড়ায় রাজাকারদের ওপর অপারেশন চালিয়ে ৮ জন রাজাকারকে হত্যা ও ৫ জনকে বন্দি করেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে অর্ধশতাধিক পাকিস্তানি সেনা ও অনেক রাজাকার- সেদিন বিকেল ৪টার দিকে কধুরখীল গ্রামে ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে। তাদের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য নিরীহ লোকজন কর্ণফুলী নদী পেরিয়ে রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার দিকে পালাতে থাকে। পাকিস্তানি সেনারা গ্রামের উত্তর পাড়া ও দক্ষিণ পাড়ায় অনেকক্ষণ তাণ্ডব চালিয়ে অনেক নারীকে ধর্ষণ করে এবং অনেককে বন্দি করে। কধুরখীল দুর্গাবাড়ি সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় বন্দিদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের ২১ জনকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করা হলে ২০ জন ঘটনাস্থলে শহীদ হন। একজন গুলিবিদ্ধ হয়। তার নাম অমূল্যরঞ্জন বর্ধন। পাকসেনা ও রাজাকাররা শহীদ ২০ জনের লাশের সঙ্গে অমূল্যরঞ্জনকেও মৃত ভেবে পাশের ডোবায় ফেলে কচুরিপানা ও লতা-পাতা দিয়ে ঢেকে রেখে চলে যায়। অতঃপর অমূল্যরঞ্জন সেখান থেকে উঠে আসতে সক্ষম হয়। তার ডান হাত, ডান চোখ ও উরুতে গুলি লেগেছিল।
কধুরখীল গণহত্যায় শহীদরা হলেন- সমীর চৌধুরী, অবিনাশ চন্দ্র শীল, বাবুল দাশ, মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, দিলীপ প্রসাদ চৌধুরী, শান্তি দেব, চন্দন দাশগুপ্ত, ভগবান চন্দ্ৰ চৌধুরী, যতীন্দ্র দেওয়ানজী, তিনকড়ি দাশগুপ্ত, লেদু দাশগুপ্ত, সুধীর রঞ্জন চৌধুরী, নিরঞ্জন দাশগুপ্ত, রবীন্দ্রলাল দে, দীপক চৌধুরী, বঙ্কিমচন্দ্র আইচ, রতিরঞ্জন মজুমদার, তেজেন্দ্র লাল মজুমদার, বগলা চরণ দেওয়ানজী এবং তারাচরণ দেওয়ানজী। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড