You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর বিক্রম ওয়ালিউল্লাহ

ওয়ালিউল্লাহ, বীর বিক্রম (১৯২৭-১৯৯৪) মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯২৭ সালের ৬ই জুন নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের ছোট জীবননগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. করিম বক্স এবং মাতার নাম আমিরুননেছা। তিনি নিজ গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন।
১৯৭১ সালে ওয়ালিউল্লাহ পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে সামরিক প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ তাঁকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অণুপ্রেরণা জোগায়। ২৪শে এপ্রিল তিনি চট্টগ্রাম থেকে এসে সুবেদার মেজর লুৎফর রহমানের নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনীর ২ নম্বর সেক্টরে যোগ দেন এবং নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি নোয়াখালীতে গ্রুপ কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। এপ্রিল মাসে ওয়ালিউল্লাহ নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে বেশকিছু সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। ৯ই মে তিনি নোয়াখালীর বগাদিয়ায় টহলরত পাকবাহিনীর পিকআপ ভ্যানের ওপর আক্রমণ করেন। এতে একজন জেসিওসহ ২ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। ঘটনার পরপরই পাকসেনাদের আরো দুটি গাড়ি সেখানে এসে পাল্টা হামলা করলে ওয়ালিউল্লাহর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যায়। এ-যুদ্ধে তাঁর কপালে গুলি লাগে। ১১ই মে তিনি নোয়াখালীর মীরগঞ্জে পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ করলে তারা বিপুল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং অনেক অস্ত্রশস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়। এ-যুদ্ধে সুবেদার ওয়ালিউল্লাহ অসীম বীরত্ব ও সাহসিকতার স্বাক্ষর রাখেন। ১৮ই মে তিনি সাহেবজাদার পুল ধ্বংস করে লাকসাম-নোয়াখালীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ২৬শে মে তিনি দালালবাজার রাজাকার- ক্যাম্প আক্রমণ করলে ৩০ জন রাজাকার নিহত হয় এবং ৬টি রাইফেল তাঁর বাহিনীর দখলে আসে। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর এই বীরত্ব ও সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। ওয়ালিউল্লাহ ১ কন্যা ও ২ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম আমিরের নেছা। ১৯৯৪ সালের ২রা অক্টোবর এই বীর মুক্তিযোদ্ধা পরলোক গমন করেন। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!