You dont have javascript enabled! Please enable it! বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের অধ্যাপক, সাংবাদিক ও লেখক ওয়ারিস মীর হিলাল-ই-ইমতিয়াজ - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের অধ্যাপক, সাংবাদিক ও লেখক ওয়ারিস মীর হিলাল-ই-ইমতিয়াজ

ওয়ারিস মীর হিলাল-ই-ইমতিয়াজ (১৯৩৮-১৯৮৭) পাকিস্তানের অধ্যাপক, সাংবাদিক ও লেখক। তিনি ১৯৩৮ সালের ২২শে নভেম্বর অবিভক্ত ভারতের (বর্তমান পাকিস্তানের) পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। শিয়ালকোটের সরকারি মুরে কলেজে অধ্যয়ন শেষে ১৯৬৪ সালে তিনি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন এবং ১৯৬৫ সালে একই বিভাগে ওয়ারিস মীর হিলাল-ই-ইমতিয়াজ প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি লন্ডনের সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে সাংবাদিকতায় এম.ফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন এবং ২০ বছরের অধিক শিক্ষাদান করেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব কয়টি উর্দু দৈনিক পত্রিকায় লেখালেখি করেন। তিনি সত্তর ও আশির দশকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ সমসাময়িক বিষয়াদি নিয়ে ব্যাপকভাবে লেখালেখি করেন। এছাড়াও তিনি উর্দু ভাষায় বেশ কয়েকটি পুস্তক রচনা করেন, যেমন- Fauj ki Siyasat, Kaya Aurat Aadhi Hain ইত্যাদি। তিনি ১৯৮৭ সালের ৯ই জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। সাংবাদিকতায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ২০১৩ সালে তাঁকে মরণোত্তর হিলাল-ই-ইমতিয়াজ খেতাব প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ওয়ারিস মীর ছাত্রদের একটি দল নিয়ে বাংলাদেশে এসে গণহত্যার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন ও বিস্তারিত বিবরণ শুনে ক্ষুব্ধ হয়ে দৈনিক জং পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ফলে তিনি সামরিক শাসকের রোষানলে পড়েন এবং সমালোচনা ও নিন্দার শিকার হন। পাকিস্তানি হয়েও তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমাপ্রার্থনার তিনি দৃঢ় সমর্থক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২৪শে মার্চ ২০১৩ ওয়ারিস মীর-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড