You dont have javascript enabled! Please enable it! ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা' প্ৰাপ্ত মহাবীরচক্র এম এন আর সামন্ত - সংগ্রামের নোটবুক

মহাবীরচক্র এম এন আর সামন্ত

এম এন আর সামন্ত, মহাবীরচক্র (১৯৩০-২০১৯) ভারতীয় নৌবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত সৈনিক, ভারত সরকার কর্তৃক ‘মহাবীরচক্র’ খেতাবে ভূষিত, মুক্তিযুদ্ধকালে নৌকমান্ডোদের প্রশিক্ষক, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা পালনকারী ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্ৰাপ্ত।
মোহন নারায়ণ রায় সামন্ত (এম এন আর সামন্ত নামে সমধিক পরিচিত) ১৯৩০ সালের ১৯শে অক্টোবর ভারতের মহারাষ্ট্রের বেসাইন (বর্তমানে বাসাই) এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বোম্বের (বর্তমান মুম্বাই) উইলসন কলেজে অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৯৫২ সালে ভারতীয় নৌবাহিনীর সাবমেরিন শাখায় কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি সফলভাবে ভারতীয় নৌবাহিনীর তৃতীয় সাবমেরিন আইএনএস কারাঞ্জ-কে কমিশনিং করেন। ১৯৭১ সালে ক্যাপটেন এম এন আর সামন্ত কলকাতায় অবস্থিত নৌ-গোয়েন্দা অধিদপ্তরের অধীনে একটি গোপন নৌ-ইউনিটের অফিসার ইনচার্জ ছিলেন। প্রশিক্ষণ সংস্থার কমান্ড্যান্ট হিসেবে তিনি ভাগীরথী নদীর অদূরে পলাশিতে মুক্তিবাহিনী-র ৫ শতাধিক সদস্যকে নৌকমান্ডো হিসেবে গড়ে তোলার প্রশিক্ষণ প্রদানের দায়িত্ব পালন করেন। এখান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নৌকমান্ডোরা সফলভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর জাহাজ, ফেরি, বন্দর, সেতু ইত্যাদি আক্রমণ ও ধ্বংস করে পাকিস্তানি বাহিনীর লজিস্টিক লাইনে বিপর্যয় সৃষ্টি করেন। এর মধ্যে ১৫ই আগস্ট একযোগে ৪টি নৌ ও সামুদ্রিক বন্দরে পরিচালিত -অপারেশন জ্যাকপট – ছিল সাড়া জাগানো ঘটনা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর সাহসিকতা, বীরত্ব, সফলতা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার কর্তৃক তাঁকে ‘মহাবীরচক্র’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ২০১৯ সালের ২০শে মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে সংগঠিত করতে সহায়তা করেন এবং মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে অভিযানে নেতৃত্ব দেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০১২ সালের ২০শে অক্টোবর ক্যাপ্টেন (অব.) এম এন আর সামন্ত-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড