You dont have javascript enabled! Please enable it!

এলাসিন গণহত্যা

এলাসিন গণহত্যা (দেলদুয়ার, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় ১২ই মে টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন ইউনিয়নের অন্তর্গত এলাসিন গ্রামে। টাঙ্গাইল জেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং দেলদুয়ার উপজেলা সদর থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে গ্রামটির অবস্থান। এখানে একটি বাজার আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী ও রাজাকাররা এলাসিন বাজার ও গ্রামে তিনবার আক্রমণ চালায়। ১২ই মে এখানে একটি গণহত্যা চালায়। তাতে ৯ জন নিরপরাধ গ্রামবাসী প্রাণ হারান। পাকবাহিনী ৩০-৪০টি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে এবং ১৫ জন নারীকে ধর্ষণ করে। এসব ঘটনায় এলাসিনের কুখ্যাত রাজাকার কাজী ওয়ালী উল্লাহ ও খোকা পাক হানাদারদের সহযোগিতা করে।
এলাসিন গ্রামের গণহত্যায় শহীদ হন এলাসিনের যোগেন্দ্রনাথ শীল, আবাদপুর মধ্যপাড়ার মন্টুলাল সাহা, বিমল কুমার সাহা, আগৈরের কালিকিংকর সাহা, আগ এলাসিনের জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বল্প বরোটিয়ার ইয়াছিন মিঞা, পাছ এলাসিনের মিয়া চাঁন শিকদার, বানিজ উদ্দিন শিকদার ও হাছেন আলী শিকদার। এঁদের মধ্যে যোগেন্দ্রনাথ শীল ছিলেন এলাসিন হাইস্কুলের শিক্ষক। রাজাকার কাজী ওয়ালী উল্লাহর ইশারায় পাকবাহিনী তাঁকে নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যা করে। মন্টুলাল সাহা ও বিমল কুমার সাহা ছিলেন এলাসিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। এলাসিন বাজারস্থ মণিহারী দোকান থেকে তাদের ধরে নিয়ে মসজিদের পাশে বেলগাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে বেয়নেট দিয়ে হত্যা করা হয়। কালিকিংকর সাহা ছিলেন এলাকার একজন নামকরা গায়ক। পাকসেনারা তাঁকে বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে মন্দিরে নিয়ে মূর্তি ভাঙার নির্দেশ দেয়। কিন্তু মূর্তি ভাঙতে অস্বীকার করায় হানাদাররা তাঁকে মন্দিরের ভেতরই বেয়নেট দিয়ে হত্যা করে। [শফিউদ্দিন তালুকদার ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!