You dont have javascript enabled! Please enable it! ৯নং সেক্টর কমান্ডার, স্বাধীনতা-পরবর্তী রাজনীতিবিদ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ জলিল - সংগ্রামের নোটবুক

এম এ জলিল

এম এ জলিল (১৯৪২-১৯৮৯) বীর মুক্তিযোদ্ধা, ৯নং সেক্টর কমান্ডার, স্বাধীনতা-পরবর্তী রাজনীতিবিদ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৪২ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার উজিরপুর গ্রামে (উপজেলা সদর) তাঁর জন্ম। তাঁর পিতার নাম আলী মিয়া এবং মাতা রাবেয়া খাতুন। তাঁর জন্মের তিন মাস পূর্বে পিতা মৃত্যুবরণ করেন। মেজর জলিল ছিলেন একমাত্র পুত্র। তিনি ছাড়া পিতা-মাতার এক কন্যা সন্তান ছিল। পিতৃহারা জলিল নানা বাড়িতে বেড়ে ওঠেন। ১৯৬০ সালে তিনি স্থানীয় ডব্লিউ বি ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৬১ সালে ইয়ং ক্যাডেট হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। সেখানে থাকাকালে ১৯৬৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান একাডেমি থেকে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি ইতিহাসে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৫ সালে কমিশন লাভ করে তিনি পাকিস্তানের ট্যাংক রেজিমেন্টে যোগ দেন। ১৯৭০ সালে তিনি মেজর পদে উন্নীত হন। ১৯৭১ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি তিনি মায়ের অসুস্থতার কারণে এক মাসের ছুটি নিয়ে দেশে আসেন। এর পূর্বে তিনি পাকিস্তানের মূলতান শহরে কর্মে নিয়োজিত ছিলেন। পাকিস্তান সেনাদপ্তরের তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও তিনি আর চাকরিতে ফিরে যাননি। যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা ও ফরিদপুরের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত ৯নং সেক্টরে তিনি কমান্ডারের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। মেজর জলিল ছিলেন অত্যন্ত সাহসী ও রাজনীতি-সচেতন একজন দেশপ্রেমিক সৈনিক। স্কুলজীবন থেকেই তাঁর লেখালেখিতে হাত ছিল। বঙ্গবন্ধুর ‘আমাদের বাঁচার দাবী’ ৬-দফা কর্মসূচি (১৯৬৬) পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরিরত অন্যান্য বাঙালি অফিসার-সৈনিকদের মতো তাঁকেও দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ-এর বিজয় বাঙালির অধিকার আদায়ে তাঁদের মনের সংকল্প আরো বৃদ্ধি করে। তবে একই সঙ্গে চাকরির সুবাদে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী সম্বন্ধে তাঁর মধ্যে যে ধারণা জন্মায়, তাতে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের হাতে তাদের ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে তিনি সন্দিহান ছিলেন। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান কর্তৃক ৭১-এর ৩রা মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রশ্নে তাঁর সন্দেহকে দৃঢ়মূল করে। ইয়াহিয়া সামরিক জান্তার ঐ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের অসহযোগ আন্দোলন-এর ডাক দেন এবং ২৫শে মার্চ রাতে -অপারেশন সার্চলাইট নামে নির্বিচারে বাঙালিদের হত্যায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত পূর্ব বাংলায় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন চলতে থাকে। তখন মেজর জলিল ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে। সেখানে বসে সার্বিক পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছিলেন। সম্ভাব্য মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিস্বরূপ স্বউদ্যোগে তিনি এলাকার ছাত্র- তরুণদের ট্রেনিং দান শুরু করেন। এরপর এলো বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। ঐ ভাষণে তিনি স্বাধীনতার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা’র আহ্বানের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতির সুষ্পষ্ট দিকনির্দেশনা লাভ করেন, যদিও তাঁর প্রত্যাশা ছিল বঙ্গবন্ধু ঐদিন সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন। যাহোক, বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ-এর পর তিনি উজিরপুর থানা থেকে রাইফেল সংগ্রহ করে ছাত্র-যুবকদের ট্রেনিং প্রোগ্রাম আরো জোর গতিতে চালিয়ে যেতে থাকেন। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইয়াহিয়া সরকার একদিকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের উপায় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল, অপরদিকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে জাহাজ ও বিমানে করে পূর্ব বাংলায় সৈন্য ও গোলাবারুদ নিয়ে আসছিল। উপরন্তু সামরিক দপ্তর থেকে ছুটিতে থাকা বাঙালি অফিসার- সৈনিকদের জরুরি ভিত্তিতে চাকরিতে যোগদানের নির্দেশনা দেয়। এসবের ভেতর মেজর জলিল অশনি সংকেত দেখতে পান। তাই তিনি বরিশাল শহরে প্রতিরোধ সংগ্রামের অন্যতম নেতা নূরুল ইসলাম মঞ্জুর এমএনএ-এর সঙ্গে জেলার সর্বত্র ছাত্র-তরুণদের ট্রেনিং প্রদানের বিষয়ে আলোচনা করেন। ২৫শে মার্চ রাতে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর ‘ক্র্যাকডাউন’ এবং তাদের হাতে বন্দি হওয়ার পূর্বে ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা ঐদিন রাতেই বরিশালের নেতৃবৃন্দের কাছে পৌঁছালে, সকালেই তাঁরা মেজর জলিলকে মুক্তিযুদ্ধের সামরিক নেতৃত্ব গ্রহণের আহ্বান জানান। সঙ্গে-সঙ্গে তিনি তা গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য তিনি পূর্বেই প্রস্তুত হয়ে ছিলেন
২৬শে মার্চ সকালে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে ইতঃপূর্বে গঠিত বরিশাল সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ এক তাৎক্ষণিক বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে এর সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্ব বণ্টন করেন। বরিশাল সদর গার্লস স্কুলে এর কার্যালয় স্থাপিত হয়, যা ‘স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সচিবালয়’ নামে পরিচিত। নূরুল ইসলাম মঞ্জুর এমএনএ ছিলেন এর বেসামরিক বিভাগীয় প্রধান এবং আমির হোসেন আমু এমপিএ ছিলেন ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগের দায়িত্বে। আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এমএনএ ছিলেন এর অন্যতম উপদেষ্টা। মেজর জলিলের ওপর এর সামরিক বিভাগের দায়িত্ব ন্যস্ত হয়। একই দিন দুপুরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বরিশালের ডেপুটি কমিশনার, মেজর জলিল প্রমুখের অংশগ্রহণে বরিশাল শহরে পুলিশ, আনসার, ছাত্র ও জনতার এক মিছিল বের হয়। সমগ্র শহর হয় বিক্ষোভে উত্তাল।
মেজর জলিলের সার্বিক নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে বরিশাল শহরের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-যুবক ও অন্যান্যদের মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পুরো মাত্রায় শুরু হয়। এজন্য সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য ও অস্ত্র পরিচালনায় পারদর্শী অন্যদের নিযুক্ত করা হয়। সবচেয়ে বৃহৎ ট্রেনিং সেন্টার ছিল বরিশাল বেলস্ পার্ক। এ পার্ক সংলগ্ন আইডব্লিউটিএ-র দপ্তর প্রধানের কাঠের দোতলা বাংলো বাড়িটি ছিল মেজর জলিলের এখানকার হেডকোয়ার্টার্স। বরিশাল ছাড়াও দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য জেলা, মহকুমা এমনকি থানা সদর পর্যন্ত এরূপ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়।
খুলনা শহরের নিকটবর্তী গল্লামারীতে অবস্থিত খুলনা রেডিও স্টেশন দখল করার উদ্দেশ্যে মেজর জলিল একটি টিম নিয়ে ৬ই এপ্রিল বরিশাল থেকে বাগেরহাটে গিয়ে পৌঁছান। সেখান থেকে তিনি ছুটিতে আসা ভোলার নায়েক সুবেদার ছিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে টিমের অন্যান্য সদস্যকে রেডিও স্টেশন অপারেশনের জন্য পাঠান। এ টিমের সঙ্গে খুলনা শহর থেকে শেখ কামরুজ্জামান টুকু (আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান ও পরবর্তীতে মুজিব বাহিনী-র আঞ্চলিক কমান্ডার) ও শেখ আব্দুল কাইয়ুম (খুলনা সদর ছাত্রলীগ-এর সাধারণ সম্পাদক ও জয়বাংলা বাহিনীর প্রধান) তাঁদের আরো কিছু সদস্য নিয়ে যোগ দেন। পরের দিন ৭ই এপ্রিল রাতে রেডিও স্টেশনে অবস্থানরত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণ পরিচালনা করা হয়। এ অভিযানে শত্রুপক্ষের বেশকিছু সৈন্য হতাহত হয়। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে একজন শহীদ হন। শত্রুর ভারী অস্ত্র ও দুর্ভেদ্য প্রাচীরের কারণে রেডিও স্টেশন দখল করা সম্ভব না হলেও এ অভিযানের ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল অনেক বৃদ্ধি পায়।
২৪শে এপ্রিল পর্যন্ত এক মাস যাবৎ বরিশাল শহরসহ দক্ষিণাঞ্চল হানাদারমুক্ত রাখা সম্ভব হয়। এদিকে অস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ২৩শে এপ্রিল মেজর জলিল কয়েকজন সহযোদ্ধাসহ আনোয়ারা নামে একটি লঞ্চে করে সুন্দরবনের পথ ধরে পশ্চিম বাংলার ২৪ পরগনা জেলার বশিরহাট মহকুমার হাসনাবাদের ইছামতি (কালিন্দী) নদীর ঘাটে গিয়ে পৌঁছান। ৬ই মে আনোয়ারা ও সোহাগপুর নামে দুটি লঞ্চে অস্ত্র নিয়ে সুন্দরবনের রুট ধরে দেশে প্রবেশকালে গাবুরা নামক স্থানে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা পাকিস্তানি গানবোট দ্বারা তাঁরা আক্রান্ত হন। শত্রুর গোলার আঘাতে লঞ্চ দুটিতে আগুন ধরে এক পর্যায়ে অস্ত্রশস্ত্রসহ নিমজ্জিত হয়। মহিউদ্দিন আহমেদ এমপিএ (পিস্তল মহিউদ্দিন নামে পরিচিত)-সহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা দালালদের সহায়তায় পাকহানাদারদের হাতে ধরা পড়েন। মেজর জলিল ও তাঁর সঙ্গের অন্যান্যরা কোনোভাবে প্রাণে রক্ষা পান।
গাবুরা বিপর্যয়ের পর দ্রষ্টব্য গাবুরা লঞ্চ যুদ্ধ – মেজর জলিল ভারতে ফিরে গিয়ে পুনরায় সংগঠিত হতে নানা প্রচেষ্টা গ্রহণ করেন। পশ্চিম বাংলার বশিরহাট মহকুমার অন্তর্গত হাসনাবাদ থানার টাকিতে তাঁর হেডকোয়ার্টার্স প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। যুদ্ধ পরিচালনার সুবিধার্থে ৯নং সেক্টরকে ৬টি সাব-সেক্টরে ভাগ করা হয়, যথা- বরিশাল, পটুয়াখালী, সুন্দরবন-পিরোজপুর বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ- ফরিদপুরের অংশবিশেষ, সাতক্ষীরা-দেবহাটা ও খুলনার সীমান্তবর্তী অঞ্চল। এছাড়া এ সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত থানাসমূহের প্রত্যেকটিতে একজন করে থানা কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়। ৯নং সেক্টরে অসংখ্য নদ-নদী থাকায় শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ৬টি লঞ্চকে গানবোটের আদলে সাজিয়ে ব্যবহার উপযোগী করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য, ইপিআর, পুলিশ, আনসার ও মুজাহিদ বাহিনীর প্রশিক্ষিত সদস্য ছাড়াও এ সেক্টরে ২০০০ গেরিলা যোদ্ধা ছিলেন। মেজর এম এ জলিলের নেতৃত্বে সাব-সেক্টর কমান্ডারগণ পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে বহু স্থানে যুদ্ধে লিপ্ত হন এবং মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে তা তীব্রতর হয়। এসবের মধ্যে তালতলি-জুনাহার যুদ্ধ, আটঘর-কুড়িয়ানা (স্বরূপকাঠি)-র পেয়ারা বাগান যুদ্ধ, সুন্দরবন এলাকায় মেজর জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে গানবোট যুদ্ধ, তুষখালী যুদ্ধ, মঠবাড়িয়া থানা দখল যুদ্ধ, গাবখান যুদ্ধ, দেউলা যুদ্ধ, বামনা থানা দখল যুদ্ধ, বানারীপাড়া থানা দখল যুদ্ধ, কাউখালী থানা দখল যুদ্ধ, সাতক্ষীরা যুদ্ধ মিত্রবাহিনী-র সঙ্গে সম্মিলিতভাবে খুলনা শহর দখল যুদ্ধ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের দুসপ্তাহ পর ৩১শে ডিসেম্বর প্রতিবাদী আচরণের কারণে মেজর জলিলকে বন্দি করা হয়। ছ-মাস বন্দি থাকার পর ১৯৭২ সালের ৭ই জুলাই তিনি মুক্তি পান। ৩১শে জুলাই তাঁকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করে সরকারবিরোধী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরবর্তীতে তিনি দলের সভাপতি হন। ১৯৭৪ সালের ১৭ই মার্চ তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও করতে গেলে অন্যান্যদের সঙ্গে তিনিও গ্রেপ্তার হন। ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বরের সেনাঅভ্যুত্থানের পরের দিন তিনি ও গ্রেপ্তারকৃত অন্যান্য জাসদ নেতৃবৃন্দ মুক্তি লাভ করেন। ২৩শে নভেম্বর কর্নেল তাহেরসহ তিনি পুনরায় গ্রেপ্তার হন। ১৯৮০ সালের ২৬শে মার্চ কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি জাসদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তিনি ধর্মচর্চায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। ১৯৮৯ সালের ১৯শে নভেম্বর পাকিস্তানের ইসলামাবাদে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃতদেহ ঢাকায় এনে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুর পূর্বে তিনি একাধিক গ্রন্থ রচনা করেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরত্বপূর্ণ অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। [হারুন-অর-রশিদ]
তথ্যসূত্র: মাসুদ মজুমদার (সম্পাদিত), মেজর জলিল রচনাবলী, ঢাকা ১৯৯৭; মেজর এম এ জলিল, সীমাহীন সমর (পুস্তিকা), ঢাকা ১৯৭৪; ওবাইদুর রহমান মোস্তফা, মুক্তিযুদ্ধের নবম সেক্টর ও আমার যুদ্ধকথা, ঢাকা ২০০৭

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড