You dont have javascript enabled! Please enable it!

এদুপাড়া গণহত্যা

এদুপাড়া গণহত্যা (লােহাগাড়া, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ২৯শে এপ্রিল। এতে ২৩ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন। ঘটনার দিন দুই ট্রাক পাকিস্তানি সৈন্য লােহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নে প্রবেশ করে এবং তাদের স্থানীয় দোসর রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে চেয়ারম্যান শাহ আলম খানের পুকুরপাড়ে পৌছায়। এরপর তারা দু-দলে বিভক্ত হয়ে বণিকপাড়া ও ব্রাহ্মণপাড়ায় হামলা চালায়। তখন সকাল ১০টা। স্থানীয় লােকজন তাদের দেখে ভয়ে পালানাের চেষ্টা করে। এসময় পাকিস্তানি সৈন্যরা পলায়নরত লােকজনের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এতে এদুপাড়ায় ২৩ জন নিরীহ গ্রামবাসী শহীদ হন। শহীদদের মধ্যে ১৯ জনের বাড়ি লােহাগাড়া উপজেলার মঙ্গলনগরে। বাকি ৪ জন আমিরাবাদ এলাকার। এ গণহত্যায় শহীদরা হচ্ছেনহরিশ চন্দ্র ধর, জীবন হরি ধর, অন্নদা চরণ ধর, কিরণ চন্দ্র ধর, রমণী মােহন ধর, ধীরেন্দ্র চন্দ্র হাজারী, বসন্ত কুমার ধর, যতীন্দ্র লাল দাশ, শেখর চন্দ্র ধর, রামচন্দ্র ধর, জগবন্ধু ধর, দুর্গাপদ ধর, ধীরেন্দ্র লাল ধর, শুভ্রসেন ধর, মনােরঞ্জন ধর, শশাংক ধর, জগবন্ধু ধর, মহেন্দ্র চন্দ্র ধর, পুলিন ধর, কবিরাজ নিরঞ্জন চৌধুরী, মন্টু রাম দে, অনিলবন্ধু দাশ ও দ্বারিশ নাথ চক্রবর্তী।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সকাল ১০-১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা এলাকায় নারকীয় তাণ্ডব চালায়। এসময় তারা গান পাউডার দিয়ে গ্রামের অনেক ঘরবাড়ি, মসজিদ ও মন্দির পুড়িয়ে দেয়। অনেক নারীকে তারা পাশবিক নির্যাতন করে। হানাদাররা তাদের দোসরদের নিয়ে লুটপাট চালায়। শহীদদের মধ্যে পুলিন ধর তার ৫ মাস বয়সী শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। হানাদাররা তাকে হত্যা করার পর মন্দিরটিতে অগ্নিসংযােগ করে। সৌভাগ্যবশত শিশুপুত্রটি বেঁচে যায়। পাকবাহিনী গণহত্যা সংঘটিত ও গ্রামে অগ্নিসংযােগ করার পর দুপুর ১২টায় স্থান ত্যাগ করে। পরে স্বজনরা এসে শহীদদের মাটি চাপা দেয়। [শামসুল আরেফীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!