You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক এ কে মাহবুবুল আলম

এ কে মাহবুবুল আলম, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৫০) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৫০ সালে রাজশাহী জেলার বােয়ালিয়া থানার (রাজশাহী সিটি করপােরেশনের অন্তর্ভুক্ত) হেতম খাঁ মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সুলতান উদ্দিন আহমেদ, মাতার নাম নূর মহল খাতুন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এ কে মাহবুবুল আলম ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৭ নম্বর সেক্টরের লালগােলা সাব-সেক্টরে ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর অধীনে বিভিন্ন রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেন। আগস্ট মাসে তাঁদের ওপর রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মধ্যে সড়ক যােগাযােগ রক্ষাকারী হরিপুর সেতু ধ্বংস করার দায়িত্ব অর্পিত হয়। এ-সময় রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বেশির ভাগ এলাকা ছিল বন্যাকবলিত। মুক্তিযােদ্ধাদের ক্যাম্পে সংবাদ আসে যে, পাকবাহিনী চাপাইনবাবগঞ্জে ১৪ই আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতাদিবস জাঁকজমকভাবে উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এজন্য হরিপুর সেতু ধ্বংসের নিমিত্তে মুক্তিযােদ্ধারা ১৪ই আগস্ট তারিখটিই বেছে নেন। এ উদ্দেশ্যে লালগােলা সাব-সেক্টর থেকে ৮৬ জন মুক্তিযােদ্ধাকে ৩টি গ্রুপে বিভক্ত করে হরিপুর সেতু ধ্বংসের জন্য পাঠানাে হয়। দ্বিতীয় গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত হন এ কে মাহবুবুল আলম। তারা কয়েকটি নৌকাযােগে রাত আনুমানিক ৯টায় কোনাে প্রকার বাধা ছাড়াই হরিপুর সেতুর কাছাকাছি পৌছে যান। তারপর সেতুটির একশ গজের মধ্যে প্রবেশ করতেই সেতু পাহারায় থাকা পাকসেনা ও রাজাকাররা মুক্তিযােদ্ধাদের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি শুরু করে। মুক্তিযােদ্ধারাও পাল্টা গুলি চালান। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড গুলি বিনিময় চলে। মুক্তিযােদ্ধাদের প্রবল আক্রমণে ২ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২ জন পানিতে ঝাঁপ দিলে তলিয়ে যায়। আহত ১ জনসহ ১১ জন পাকসেনা ও তাদের সহযােগী ধরা পড়ে। সেতুটি মুক্তিযােদ্ধাদের দখলে চলে আসে। অতঃপর এক্সপ্লোসিভ সেট করে হরিপুর সেতুটি ধ্বংস করা হয়। এ অভিযানে এ কে মাহবুবুল আলম অসীম সাহসের পরিচয় দেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার এ কে মাহবুবুল আলমকে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করে। স্বাধীনতার পর তিনি সরকারি চাকরিতে যােগদান করেন এবং বাংলাদেশ সরকারের সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। [মনিরুজ্জামান শাহীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!