You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক এ এন এম নজরুল ইসলাম - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক এ এন এম নজরুল ইসলাম

এ এন এম নজরুল ইসলাম, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৫১) বীর মুক্তিযােদ্ধা, বিমান বাহিনীর সৈনিক ও কোম্পানি কমান্ডার। তিনি ১৯৫১ সালের ৫ই জানুয়ারি গােপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার খরহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মমিন উদ্দিন এবং মাতার নাম হাজেরা খাতুন। স্থানীয় স্কুলে অধ্যয়ন শেষে তিনি চাকরি জীবন শুরু করেন।
নজরুল ইসলাম ষাটের দশকের শেষের দিকে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যােগ দেন। ১৯৭১ সালে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে কর্মরত ছিলেন। মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি দেশে এসে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন। কিন্তু দেশে আসার সুযােগ পাচ্ছিলেন না। জুন মাসে তাঁর পিতৃবিয়ােগ হলে তিনি ছুটি নিয়ে দেশে আসেন এবং মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন। ভারতে যাওয়ার পর নজরুল ইসলাম ৮ নম্বর সেক্টরে নিযুক্ত হন। এ সেক্টরের বয়রা সাব-সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন খন্দকার নাজমুল হুদা। তার অধীনে কিছুদিন তিনি সাব-সেক্টরের প্রশাসনিক কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন। এখানে তিনি মুক্তিযােদ্ধা রিক্রুটিং, বিভিন্ন ক্যাম্পে অস্ত্র ও গােলাবারুদ সরবরাহের কাজ তদারকি এবং খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী বণ্টন বিষয়ক দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাঁকে যুদ্ধে পাঠানাে হয়। ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নির্দেশে তিনি একটি কোম্পানির কমান্ডারের দায়িত্ব পান। বর্তমান নড়াইল ও মাগুরা জেলার একাধিক স্থানে তিনি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। গােপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার ভাটিয়াপাড়ায় ১৬ই ডিসেম্বরের পরও পাকবাহিনী ও রাজাকাররা অবস্থান করছিল। খন্দকার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করা হয়। এ এন এম নজরুল ইসলাম তার অধীনস্থ কোম্পানি নিয়ে এ আক্রমণে অংশ নেন। পাকবাহিনী তাদের ক্যাম্প থেকে পাল্টা আক্রমণ করলে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ হয়। কিন্তু মুক্তিযােদ্ধাদের প্রবল আক্রমণে টিকতে না পেরে পাকসেনা ও রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করে। এখান থেকে মুক্তিযােদ্ধারা প্রচুর অস্ত্র, গােলাবারুদ ও রসদ হস্তগত করেন। পাকসেনা ও রাজাকারদের আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করণে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নির্দেশে এ এন এম নজরুল ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার এ এন এম নজরুল ইসলামকে বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। তিনি ৪ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম রওশন আরা বেগম। [জালাল আহমেদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড