You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.20 | আল-বদর বাহিনী - সংগ্রামের নোটবুক

আল-বদর

আল-বদর বাহিনী ছিল দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি সহযােগি বাহিনী (auxiliary force).আল-বদর গঠন এই বিষয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল নিয়াজী বলেন The proposal for raising an organized Razakar Force remained under consideration with HQ CMLA and GHQ for a long time. Although their recruitment had started earlier, sanction for the raising of this force was given at the end of August 1971, A separate Razakars Directorate was established, and the whole set-up started taking proper shape. Two separate wings called Al-Badr and Al-Shams were organized. Well-educated and properly motivated students from the schools and rnadrasas were put in Al-Badr Wing, where they were trained to undertake ‘Specialized Operations’, while the remainder were grouped together under Al-Shams, which was responsible for the protection of bridges, vital points, and other areas. (Lt.- Gen. A.A.K. Niazi, The Betrayal of East Pakistan, p. 78]প্রধানত ইসলামী ছাত্র সংঘের কর্মীরাই আর বদর বাহিনীতে যােগ দেয়।

১৯৭১ সাল সময়কার ‘East Pakistan Police Abstract of Intelligence’-এর একটি রিপাের্টে এর সরাসরি প্রমাণ মেলে। সেই রিপাের্ট বলা হয়On 15th September, 1971 between 16.00 hours and 18.00 hours, a meeting of the workers of the ICS, Sylhet was held at Sarada Hall, Sylhet town where members of the Islamic Chhatra Sangha (ICS) delivered speeches urging upon the workers to work hard for the integrity of Pakistan and to join, in large number, the training course imparted by the Pakistan Army. These workers, after the training, will be known as AlBadr Bahini and their duty will be to watch and check the activities of the rebels.আল-বদর বাহিনী গঠনে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠনের ইসলামী ছাত্র সংঘের ভূমিকা Hussain Haqqani-এর লেখা Pakistan Between Mosque and Military-49 Costa CITTTT STICSArmy decided to raise a Razakaar (volunteer) force of one hundred thousand from the civilian non Bengalis settled in East Pakistan and the pro-Pakistan Islamic groups, llie Jamaat-e-Islami and specially its students wing, the Islami Jamiat-e-Talaba (IJT), joined the military’s efforts in May 1971 to launch, two paramilitary countednsurgency units. The IJT provided a large number of recruits. By September, a force of fifty thousand Razakaars had been raised. Secular West Pakistani Politicians complained about “an army of Jamaat-e Islami nominees.” The two special brigades of Islamist cadres were named Al-Shams (the sun, in Arabic) and Al-Badar (the moon).

The names were significant for their symbolic value. Islam’s first battle, under Prophet Muhammad, had been the battle of Badar, and these paramilitary brigades saw themselves as the sun and the crescent of Islamic revival in South Asia. Gneral Niazi, Commander of Pakistan’s Eastern Command, later explained the role of the Razakaars.

আল-বদর বাহিনীর কর্মসূচি
১. পাকিস্তানের জনসাধারণের মধ্যে আত্মবিশ্বাস অক্ষুন্ন রাখার লক্ষে জনগণের সঙ্গে ব্যাপকভাবে যােগাযােগ গড়ে তােলা। গ্রাম-গঞ্জ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে উপস্থিত হয়ে সভা-সমাবেশের আয়ােজন করা, শত্রুর নেতিবাচক প্রপাগাণ্ডা খণ্ডন করা এবং শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি রূপায়নের জন্য জনগণের অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত আক্রমণ প্রতিহত করতে উদ্বুদ্ধ করা।
 
২.বাঙালি ও অবাঙালিদের মধ্যে সৃষ্ট ব্যবধান ঘােচানাে, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতিপূর্ণ মনােভাব জাগ্রত করার লক্ষ্যে সক্রিয় এবং বুদ্ধিবৃত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
 
৩.পাকিস্তানের শত্রুগােষ্ঠী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী এবং ভারতীয় হস্তক্ষেকারীদের কর্মকাণ্ডের প্রতি কড়া দৃষ্টি রাখার উদ্দেশ্যে নির্ভরযােগ্য খবরাখবর পাওয়ার ব্যবস্থা গড়ে তােলা।
৪.পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ও ঐক্য রক্ষার তাগিদে সামরিক অভিযানের ক্ষেত্রে পাক ফৌজ এবং সিভিল প্রশাসনকে কার্যকর গঠনমূলক সহযােগিতা প্রদান করা। শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা বিধানের উদ্দেশ্যে দেশপ্রেমিক ছাত্রদের সংগঠিত করে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
৫. সরকারি ও আধা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বিদ্যমান দেশের শক্রদের সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে সিভিল ও সামরিক প্রশাসনকে তথ্য সরবরাহ করা। উক্ত কর্মসূচির আলােকে ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ ইস্টার্ন কমান্ড প্রায় সমগ্র পূর্ব-পাকিস্তানে আল-বদর বাহিনী সংগঠিত করে ফেলে। (সেলিম মনসুর খালেদ, আল-বদর)
সাংগঠনিক অবকাঠামাে
আল-বদরের সাংগঠনিক অবকাঠামাে নিম্নরূপ ছিলাে প্রতি ইউনিট = ৩১২ ক্যাডেট = তিনটি কোম্পানি, প্রত্যেক কোম্পানিতে ১০৪ জন মুজাহিদ = কোম্পানি = তিনপি প্লাটুন, প্রত্যেক প্লাটুনে ৩৩ জন গাজি = প্লাটুন = তিনটি সেকশন টুপস, প্রত্যেক ট্রপে ১১ জন আল-বদর। প্রত্যেক ইউনিটের একজন করে কমান্ডার এবং দুইজন সেকেন্ড কমান্ডার ছিলাে। জেলা পর্যায়ে ইউনিট গঠন করা হতাে বিধায় প্রাদেশিক পর্যায়ে কোনাে কমান্ডার ছিলাে না। তবে ছাত্র সংঘের প্রাদেশিক মজলিসে শুরা সকল কার্যক্রমের প্রতি দৃষ্টি রাখতাে। স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব বাছাইয়ের ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত নীতি নির্ধারণ করা হয়েছিলাে যে, কমান্ডারকে তাকওয়া, আমল, ঈমান এবং সত্যের পথে অবিচল থাকার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং তার সকল সহযােগীর মধ্যে উত্তম হতে হবে। (সেলিম মনসুর খালেদ, আল-বদর] । আল-বদর বাহিনীর সদস্যদের রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের মতাে Identity Card ইস্যু করা হতাে। এই Identity Card’গুলােতে সাধারণত যা লেখা থাকত, তা তুলে দেয়া হলাে।
The AL-BADAR FORCE is a Composition of the youths aspiring to implement the ideology of Pakistan and higly imbued with the national Consciousness. This FORCE has been extending all-out Co-oparation to the Pakistan Army. The AL-BADAR is a symbol of fear and undomitable challenge to the miscreants and Indian infiltrators.
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তার সহযােগী বাহিনীসমূহ যখন পরাজয়ের দারপ্রান্তে তখন স্বাধীন বাঙালির জ্ঞানভিত্তিক বিকাশের সম্ভাবনা পুরােপুরি ধ্বংস করে দেয়ার লক্ষ্যে তারা বাঙালি বুদ্ধিজীবী। হত্যার নীল নকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে। এই পরিকল্পনায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে আল-বদর বাহিনী। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই নৃশংস ঘটনার প্রথমদিককার প্রচার ঘটে মার্কিন যুক্তরাষ্টের NBC News চ্যানেলে। ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রচারিত Phil Brady’র সেই রিপাের্টটি তুলে দেয়া হল –
In East Pakistan there have been atrocities carried out against the civilians both during and since it but over the weekend it had been discovered that there had been a massacre. “This is Rayerbazaar a suburb of Dacca. There were rumors that many Bengali intellectuals were taken here by the Pakistani Police. They were picked up only a few days before the end of the war. But no one knew what happened to them. It is now thought that they were taken here only hours before the end, lined up and shot. Among the dead here were doctors, journalists, professors, painters and one poet. There are still two hundred and fifty other intellectuals missing and after what was found here there is little hope now that they are alive. The slaughter at Rayerbazaar stunned the people and their mood turned from joy to hate.
Q. Do you think there is any hope or real chance looking at this of ever reaching an understanding again with the Pakistanis?
A. What, I don’t, I mean it’s ridiculous to talk about Pakistanis anymore. This, there couldn’t be anymore, I mean, whatever there was its dead absolutely deep down, it’s dead, I mean, it’s blood for blood.
A. It’s just blood for blood. I mean there’s nothing else down, down here. We have […] what’s happened so we must do the same thing to them. There’s nothing else about it. We must, we must take the revenge.
A. All of them have got to be killed. We, we believe in violence, we have got got this about by violence not constitutionalism. Violence is the only answer for Bengal, for the freedom of Bengal, we have always speeched it and we will do it to the last, violence.
In East Pakistan there have been atrocities carried out against the civilians both during and since it but over the weekend it had been discovered that there had been a massacre. “This is Rayerbazaar a suburb of Dacca. There were rumors that many Bengali intellectuals were taken here by the Pakistani Police. They were picked up only a few days before the end of the war. But no one knew what happened to them. It is now thought that they were taken here only hours before the end, lined up and shot. Among the dead here were doctors, journalists, professors, painters and one poet. There are still two hundred and fifty other intellectuals missing and after what was found here there is little hope now that they are alive. The slaughter at Rayerbazaar stunned the people and their mood turned from joy to hate.
Q. Do you think there is any hope or real chance looking at this of ever reaching an understanding again with the Pakistanis?
A. What, I don’t, I mean it’s ridiculous to talk about Pakistanis anymore. This, there couldn’t be anymore, I mean, whatever there was its dead absolutely deep down, it’s dead, I mean, it’s blood for blood.
A. It’s just blood for blood. I mean there’s nothing else down, down here. We have […] what’s happened so we must do the same thing to them. There’s nothing else about it. We must, we must take the revenge.
A. All of them have got to be killed. We, we believe in violence, we have got got this about by violence not constitutionalism. Violence is the only answer for Bengal, for the freedom of Bengal, we have always speeched it and we will do it to the last, violence.
If the dead here were only a cool reminder of the bitterness and hatred of before it would be bad enough but it seemed now that any hope of reconciliation or forgiveness would be drowned out in the cries of blood for blood. Phil Brady, NBC News, Rayerbazaar, Bangladesh.”
বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার এই প্রক্রিয়ার আরাে স্পষ্ট একটি চিত্র উঠে আসে ICJ’র  রিপাের্টে-
These murders were perpetrated by members of Al Badr, a Bengali organization which came into being after 25 March, 1971, and which is believed to have been the action section of Jamaat-e-Islam, the extremist Muslim. Their goal was to wipe out all Bengalis who advocated independence and the creation of a secular state. It has been alleged that the Al Badr raid, were directed by a group of Pakistani officers, who were said to have approved the list of those to be assinated. The Al Badr raids were carried out at night, the victims being led away blindfolded at gun point, never to return. Many were taken to the Dacca College of Physical Education building, A janitor, at the College stated They brought in hundred, of people, all nicely dressed and tied up. We could hear the screaming all the time from the rooms.’ The victims were later taken in trucks to a deserted brickyard near Mohammedpur. The only known survivor, who managed to loosen the rope with which he was tied and escaped, has described how these prisoners were tortured before being taken out to be shot. The victims included women, one of whom was an editor who was found with two bayonet wounds, one through the eye and one in the stomach, and two bullet wounds. It is alleged that a heart specialist, Dr. Fazle Rabbe, had been cut open and his heart ripped out. Similar atrocities are alleged to have been committed in other parts of East Pakistan in the closing days of the war. The insensate vengeance and hatred which led to these killings in the clos ing stages of the war is a grim epilogue to the record of systematic repression in East Pakistan from March to December [International Commission of Jurists, Report of the commission of Inquiry into the events in East Pakistan, 1971)
১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১, দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত ‘আল-বদর’ শিরােনামের সংবাদে বলা হয়, আল-বদর একটি নাম, একটি বিস্ময়, যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী, আল-বদর সেখানেই। যেখানে দুষ্কৃতিকারী আর বদর সেখানেই। ভারতীয় চর কিংবা অনুপ্রবেশকারীদের কাছে আল-বদর সাক্ষাৎ আজরাইল।

সূত্র : ফিরে-দেখা-৭১-যুদ্ধাপরাধীদের-বিচার-সুজন-হালদার