উত্তরসুর গণহত্যা
উত্তরসুর গণহত্যা (শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার) সংঘটিত হয় মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে। এতে ৯ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে দুই কিলােমিটার পশ্চিমে উত্তরসুর গ্রাম অবস্থিত। হিন্দু অধ্যুষিত এ গ্রামকে ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে এবং সিলেট-ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে ট্র্যাক দুভাগে বিভক্ত করেছে। একটি অংশ উত্তর উত্তরসুর এবং অন্যটি দক্ষিণ উত্তরসুর। রেল ও সড়ক পথের মাঝখানে অবস্থিত শাহজীবাজার উত্তরসুরের প্রাণকেন্দ্র। ২৮শে এপ্রিল শ্রীমঙ্গলে বােমা বর্ষণের পর উত্তরসুরের হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতের কমলপুরে আশ্রয় নেয়। কিছু মানুষ পৈতৃক ভিটার টানে বাড়িতে থেকে যায়। ১লা মে-র পর শ্রীমঙ্গলে পাকবাহিনী ঘাঁটি স্থাপন করে এবং হিন্দু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগ-এর নেতাকর্মী-সমর্থকদের হত্যা করতে শুরু করে। স্থানীয় রাজাকার ও শান্তি কমিটির সহযােগিতায় মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে তারা শাহজীবাজারের পার্শ্ববর্তী এলাকায় আক্রমণ চালিয়ে নিরীহ হিন্দু ও আওয়ামী লীগের মতাদর্শে বিশ্বাসী ৯ জন মানুষকে হত্যা করে। নিহতরা হলেনমুক্তিযােদ্ধা শ্যামাকান্তর বড়ভাই, শ্যামাকান্তর পিতা, রােহিণী বৈদ্য, মুক্তিযােদ্ধা নাইয়রের পিতা, রহমত উল্লাহ, আওয়ামী লীগ সমর্থক তােকাই, তােকাই-এর পিতা, কেতকী সেন ও নিকুঞ্জ বিহারী সেন। এছাড়া আরাে অনেককে উত্তরসুর থেকে ধরে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। তাদের কেউ-কেউ আর ফিরে আসেননি। [চন্দনকৃষ্ণ পাল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড