উল্কাখালী নদীঘাট বধ্যভূমি
উল্কাখালী নদীঘাট বধ্যভূমি (কলমাকান্দা, নেত্রকোনা) নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা থানার পাশে উল্কাখালী নদীর পাড়ে অবস্থিত। ৩০শে এপ্রিল কলমাকান্দা থানায় অনুপ্রবেশের পর পাকবাহিনী থানার বিভিন্ন স্থানে অনেক মানুষকে হত্যা করে। স্থানীয় রাজাকার ও আলবদরদের সহায়তায় পাকবাহিনী উাখালী নদীঘাটের এ বধ্যভূমিতে বিভিন্ন গ্রাম থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ও এলাকার সাধারণ মানুষদের ধরে এনে হত্যা করে। পাকহানাদার বাহিনীর দালালদের মধ্যে মােফাজ্জল হােসেন ও মৌলানা আব্দুল খালেক পাকবাহিনীকে বিশেষভাবে সহায়তা করে। ১৬ই আগস্ট পাকবাহিনী দুর্লভপুর গ্রামের ধনাঢ্য কৃষক কালাচান তালুকদারকে মুক্তিযােদ্ধাদের সহযােগিতা করায় বাড়ি থেকে ধরে কলমাকান্দা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে দালাল মােফাজ্জল হােসেন তার পরিবারের কাছে ৫০ হাজর টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা পরিশােধ করার পরও তাঁকে উাখালী বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়। ১৭ই আগস্ট বাহাদুরকান্দা গ্রামের স্বচ্ছল কৃষক তালে হােসেন মড়লের বাড়িতে রাজাকার ও পাকসেনারা হানা দিয়ে অর্থ-সম্পদ লুট করে। পরে তারা তালে হােসেনকে কলমাকান্দা ক্যাম্পে শারীরিক নির্যাতন শেষে উল্কাখালী বধ্যভূমিতে হত্যা করে। এদনিই রগুরামপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম (লালু মাস্টার)কে দালাল মােফাজ্জল হােসেন তার বাড়িতে ধরে আনে। পরে তাকে পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দেয়। পাকিস্তানি হানাদাররা তাকে উল্কাখালী বধ্যভূমিতে নিয়ে হত্যা করে। ২৪শে আগস্ট পাকবাহিনী ও রাজাকাররা উমরগাঁও গ্রামের আবদুল হামিদ ও দারগ আলীকে ধরে এনে এ বধ্যভূমিতে হত্যা করে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে নাম না জানা অনেক সাধারণ মানুষকে ধরে এনে উক্কাখালী নদীঘাট বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়। [জুলফিকার আলী শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড