You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.02 | ঈশান গােপালপুর গণহত্যা (ফরিদপুর সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

ঈশান গােপালপুর গণহত্যা

ঈশান গােপালপুর গণহত্যা (ফরিদপুর সদর) সংঘটিত হয় ২রা মে। পাকবাহিনী ও রাজাকাররা এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এতে ২৪ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান।
ফরিদপুর জেলার সদর থানায় ঈশান গােপালপুর গ্রামের অবস্থান। এ গ্রামে প্রয়াত জমিদার ঈশান সরকারের বাড়ি ছিল। ফরিদপুর শহর থেকে ৬-৭ কিলােমিটার দূরে অবস্থিত বাড়িটিতে জমিদারের দৌহিত্র লক্ষ্মণ সেন বাস করতেন। এ বাড়ির প্রতি স্থানীয় রাজাকারদের বিশেষ দৃষ্টি ছিল। ২১শে এপিলের পর এ বাড়িতে ন্যাপ নেতা চিত্তরঞ্জন ঘােষ ও তাঁর বড় ভাই সাংবাদিক জগদীশচন্দ্র ঘােষসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সপরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন।
২রা মে স্থানীয় দালাল জব্বার, দয়া ও মনিরের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনারা লক্ষ্মীদাসের হাটে গাড়ি রেখে লক্ষ্মণ সেনের বাড়িতে আক্রমণ করে। পাকবাহিনীর আক্রমণে গ্রামের লােকজন ভয়ে পালাতে থাকে। পাকসেনা ও রাজাকাররা পলায়নরত ব্যক্তিদের আটক করে। তারা আটককৃত ব্যক্তিদের উঠানে জড়াে করে বেয়নেট চার্জ ও কিল-লাথি মেরে রক্তাক্ত করে। তারপর পরিবারের শিশুকিশাের-মহিলাদের সামনে নির্মম শারীরিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত ব্যক্তিদের একে-একে গুলি করে হত্যা করে। পরে পুরাে গ্রামে নির্বিচার লুটপাট চালায়। লুণ্ঠন শেষে বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়।
ঈশান গােপালপুরে শহীদরা হলেন- আশুতােষ সরকার (ফটিক বাবু), যােগেশচন্দ্র ঘােষ, গৌরচন্দ্র ঘােষ, বাবুলচন্দ্র ঘােষ, দয়াল দাস, দুখীরাম দাস, যাদব বিশ্বাস, আশু গাঙ্গুলী, তারাপদ গাঙ্গুলী, মণীন্দ্রনাথ সিকদার ও তার জামাতা, বাদল সরকার, হরিপদ দাস, মন্টু চন্দ্র দাস, সন্তোষ দাস, বিমল চন্দ্র সাহা, অমলেষ সরকার, বিষ্ণু ঠাকুর, কালাচাঁদ বৈরাগী, বটা সাহা, বাদল গােস্বামী, মুকুন্দ সাহা ও অজ্ঞাতনামা দুই ব্যক্তি। সরকার বাড়ির পুকুরপাড়ে তাদের গণকবর দেয়া হয়। [আবু সাঈদ খান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড