You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক ইসতিয়াক হােসেন

ইসতিয়াক হােসেন, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৯) অসীম সাহসী এক মুক্তিযােদ্ধা। তার ডাকনাম হিদি। তিনি ১৯৪৯ সালের ২৬শে জুলাই ঢাকার জোয়ার সাহারায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ডা. মাে. আফজাল হােসেন ও মাতার নাম রেজিয়া হােসেন।
৭১-এ ইসতিয়াক হােসেন ছাত্র ছিলেন। সে অবস্থায় নানা সময়ের উত্তাল আন্দোলন তার মনে নাড়া দেয়। ২৫শে মার্চ কালরাতে পাকবাহিনী নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে দেশমাতৃকাকে মুক্ত করার দৃপ্ত শপথ নিয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন। ভারতের মেলাঘর, বয়রা ক্যাম্প ও পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনায় প্রশিক্ষণ শেষে কমান্ডার মেজর এম এ মঞ্জুরের নেতৃত্বে ৮নং সেক্টরের অধীন বিভিন্ন যুদ্ধে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। খন্দকার নাজমুল হুদা ছিলেন তার সাব-সেক্টর কমান্ডার। বিজয় অর্জনের অন্যতম কৌশল হিসেবে মুক্তিযােদ্ধারা শত্রুবাহিনীর মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য নভেম্বর মাসে সীমান্ত এলাকায় আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়ে দেন। মিত্রবাহিনীর সহযােগিতায় মুক্তিযােদ্ধারা চৌগাছার গরীবপুর আক্রমণ করেন। ২০শে নভেম্বর ইসতিয়াক হােসেনসহ মুক্তিযােদ্ধারা মিত্রবাহিনীর সঙ্গে সীমান্ত অতিক্রম করে গরীবপুর গ্রামে প্রতিরক্ষাব্যুহ গড়ে তােলেন। ২১শে নভেম্বর পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকাররা মুক্তিবাহিনীর ওপর আক্রমণ করে। প্রত্যুত্তরে উঁচু ধানক্ষেত ও নদীর তীরের আড়ালে এম্বুশ করে মুক্তিবাহিনী- ঝটিকা আক্রমণ চালায়। উভয় পক্ষে প্রচণ্ড যুদ্ধ শুরু হয়। এক পর্যায়ে পাকসেনারা পিছু হটে এবং গরীবপুরসহ চৌগাছার একাংশ মুক্তিযােদ্ধাদের দখলে আসে। এ-যুদ্ধে ইসতিয়াক হােসেন যথেষ্ট কৃতিত্বের পরিচয় দেন। গরীবপুরের যুদ্ধ ছাড়াও তিনি চৌগাছা, মাসলিয়া ও বেনাপােল আক্রমণসহ গােপালগঞ্জ জেলার ভাটিয়াপাড়ায় অমিত বিক্রমে যুদ্ধ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ইসতিয়াক হােসেনকে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ৩ কন্যা সন্তানের জনক। তার স্ত্রীর নাম শিলা রায়ান। [মাে. ওসমান গনী]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!