You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধে ইসলামপুর উপজেলা (জামালপুর) - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিযুদ্ধে ইসলামপুর উপজেলা

ইসলামপুর উপজেলা (জামালপুর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সাতই মার্চের ভাষণ শুনে ইসলামপুরের জনতা বুঝতে পারে যে, মুক্তিযুদ্ধ আসন্ন। তাই ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফ, বীর উত্তম-এর ছােটভাই প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য রাশেদ মােশাররফকে আহ্বায়ক করে একটি সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। এর সদস্য ছিলেন মজির উদ্দিন আহমেদ, জহুরুল হক (ধানু ডাক্তার), শামসুল হক আকন্দ, পরিমল সেন (নারুদা), ডা. আজিজুল হক, যুগল হাশমী, ইদ্রিস আলী, আব্দুর রউফ, খন্দকার আব্দুল কাদের, মজিবর রহমান, নজরুল ইসলাম পাহলােয়ান (ছাত্রনেতা) প্রমুখ। এঁদের নেতৃত্বে স্থানীয় জনতা মার্চের অসহযােগ আন্দোলন-এর পাশাপাশি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে।
ইসলামপুরে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিতে করিমুজ্জামান তালুকদার এমএনএ, মাে. রাশেদ মােশাররফ এমপিএ, মাে. আশরাফ হােসেন এমপিএ, এডভােকেট আব্দুল হাকিম, আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ, খােরশেদুজ্জামান (মিস্ত্রী মিয়া), গণি সরদার প্রমুখ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এঁদের পরিচালনায় নেকজাহান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও বর্তমান জে জে কে এম গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজ মাঠে মুক্তিযােদ্ধাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর আনােয়ার, দারােগা আব্দুর রহমান, শাহ মােহাম্মদ জালাল উদ্দিন (যুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার), আশরাফ আলী ও মতিউর রহমান। এখানে প্রাথমিক প্রশিক্ষণের পর উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য শাহাদাৎ হােসেন (স্বাধীন), আলাউদ্দিন জোদ্দার, ইদ্রিস আলী, জয়নাল আবেদীন, ইদ্রিস আলম, নুরুজ্জামান, মানিকুল ইসলাম (মানিক) প্রমুখ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা ট্রেনিং সেন্টারে যান। সেখানে ট্রেনিং ইনচার্জ ছিলেন ভারতের ক্যাপ্টেন কৌশিকিন ও বাংলাদেশের হাবিবুর রহমান (চুনু মিয়া)। ট্রেনিং শেষ করে মুক্তিযােদ্ধারা দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এদিকে শাহ্ মােহাম্মদ জালাল উদ্দিন একটি মুজাহিদ বাহিনী গড়ে তােলেন, যা জালাল কোম্পানি নামে পরিচিত ছিল। তাঁর নেতৃত্বে মুজাহিদরা জামালপুর ট্রেজারি থেকে ১৬০টি রাইফেল ও প্রচুর গুলি উদ্ধার করেন। এছাড়া মনােয়ার হােসেন (মুজাহিদ প্লাটুন কমান্ডার), রমিজ আলী, সুবাস চন্দ্র দাস (রতন), মােহাম্মদ আলী, শফিকুল ইসলাম (আবু) প্রমুখের নেতৃত্বে গঠিত হয় আনসার বাহিনী ও ছাত্রবাহিনী। কিছুদিন পর শাহ মােহাম্মদ জালাল উদ্দিন মুজাহিদদের নিয়ে মেঘালয়ের মহেন্দ্রগঞ্জে যান। সেখানে চৌদ্দদিনের ট্রেনিং নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং বিভিন্নজনকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে প্রশিক্ষণের জন্য মহেন্দ্রগঞ্জে পাঠান। ইসলামপুরে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন করিমুজ্জামান তালুকদার এমএনএ, মাে. রাশেদ মােশাররফ এমপি, মাে. আশরাফ হােসেন এমপিএ, এডভােকেট আব্দুল হাকিম, আব্দুস সামাদ, খােরশেদুজ্জামান (মিস্ত্রী মিয়া), গণি সরদার, পরিমল সেন, নূরুল হক, জহুরুল হক (ধানু ডাক্তার), আব্দুল বারী মণ্ডল, নূরুজ্জামান সরকার, খন্দকার আব্দুল কাদের, মানিকুল ইসলাম (বর্তমান থানা কমান্ডার), শাহ্ মােহাম্মদ জালাল উদ্দিন (যুদ্ধকালীন কমান্ডার), লস্কর আলী, আলাউদ্দিন জোদ্দার প্রমুখ। আর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন বদিউজ্জামান (বদি) ও শাহ্ মােহাম্মদ জালাল উদ্দিন। ২৯শে মার্চ রাশেদ মােশাররফের নেতৃত্বে ইসলামপুরে গঠন করা হয় ছাত্রবাহিনী। এ বাহিনীর মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
এপ্রিলের শেষদিকে পাকবাহিনী টাঙ্গাইল হয়ে মধুপুর পর্যন্ত এগিয়ে এলে শাহ মােহাম্মদ জালাল উদ্দিন, মােহাম্মদ আশরাফ আলী আকন্দ এবং মেজর আনােয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে শতাধিক মুজাহিদ প্রতিরােধ গড়ে তােলেন। এতে ইসলামপুরের অনেক মুক্তিযােদ্ধাও অংশ নেন। কিন্তু পাকসেনাদের ভারী অস্ত্র ও বিমান হামলার কারণে টিকতে না পেরে তারা পশ্চাদপসরণ করেন। এ-যুদ্ধে জালাল উদ্দিন আহত হন এবং ৩০ জন মুক্তিযােদ্ধা পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পরে পাকসেনারা তাদের হত্যা করে। এটি “ইসলামপুর প্রতিরােধ যুদ্ধ” নামে পরিচিত। এ ঘটনার পর পাকবাহিনী মধুপুর হয়ে ২২শে এপ্রিল জামালপুর সদর দখল করে এবং ২৭শে এপ্রিল ইসলামপুর থানা দখল করে সিও (ডেভেলপমেন্ট) অফিসে ক্যাম্প স্থাপন করে। ক্যাম্পে অনেক বাংকার তৈরি করে তারা মেশিনগান, এলএমজি, মর্টারসহ বিভিন্ন ভারী অস্ত্র মজুদ করে।
পাকবাহিনী ইসলামপুরে প্রবেশ করলে স্থানীয় পাকিস্তানপন্থী খােকা পাহলােয়ান, তারা পাহলােয়ান, সৈয়দ তােতা মিয়া, আলী নেওয়াজ খান লােহানী (ঘুনু মিয়া), মুনছুর আলী (মেগু), মতিয়র রহমান চৌধুরী (ইউপি চেয়ারম্যান), হারুন চৌধুরী, যতা মন্ডল (মেম্বার), শাহ্ মােহাম্মদ সুলায়মান মুন্সি, সামাদ মৌলভী, শামসুদ্দিন মিয়া, বাচ্চা মিয়া, নূরুল পাহলােয়ান, নজরুল ইসলাম পাহলােয়ান (প্রথমদিকে স্বাধীনতার পক্ষে থাকলেও পরে বিপক্ষে চলে যায়) প্রমুখ পাকিস্তানের পক্ষে স্লোগান দিয়ে তাদের সংবর্ধনা জানায়। এদের নেতৃত্বে এপ্রিল মাসে গঠিত হয় শান্তি কমিটি শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল মতিয়র রহমান চৌধুরী এবং সম্পাদক শাহ্ মােহাম্মদ সুলায়মান মুন্সি। পরে গঠিত হয় রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী। এ তিন বাহিনীর প্রধান ছিল যথাক্রমে আলী নেওয়াজ খান লােহানী, সামছুদ্দোহা মাহবুব এবং অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মনির। এসব বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযােদ্ধাদের পরিবার ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লােকজনদের চিনিয়ে দিত এবং তাদের বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযােগ করত। এছাড়া পাকবাহিনীর সহায়তায় হত্যা ও নারীনির্যাতনের মতাে জঘন্য অপরাধ তারা সংঘটিত করত।
পাকবাহিনী ২৭শে এপ্রিল ইসলামপুরে প্রবেশ করেই কয়েকটি হিন্দুবাড়িতে অগ্নিসংযােগ করে এবং লুটপাট চালায়। পরে রাজাকাররা পরিমল সেন (আওয়ামী লীগ-এর সহসভাপতি), মনসা প্রসাদ পাল, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফ, কিশাের ঠাকুর, রাধিকা পােদ্দার, গৌর পাল, কানাই পাল, মতি পাল, রাশেদ সরদার (ভেঙ্গুড়া), মুকসেদ সরকার (মুখশিমলা), রমিজ উদ্দিন (বীর চাড়িয়া), ইসলামপুরের আয়জ উদ্দিন সাদু, রমিজ উদ্দিন, যােগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, সতীশ পােদ্দার, রমেশ চন্দ্র দেবনাথ প্রমুখের বাড়ি এবং চর গােয়ালিনীর খলিফা বাড়িতে লুটপাট চালায় ও অগ্নিসংযােগ করে। এছাড়া পাথর্শী ইউনিয়নের মুজাআটা গ্রাম, চিনাডুলীর কাছিমা গ্রাম, ডিগ্রির চরের মােল্লাপাড়া, মাদ্রাসাপাড়া, পূর্ব ও মধ্য পাড়ায় নির্যাতন, লুটপাট ও অগ্নিসংযােগ করে। ঠাকুরগঞ্জ বাজার (বর্তমান ইসলামপুর বাজার)-এর সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী অক্ষয় দত্তের ছেলে বরেন দত্তের দোকান লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেয়। এরূপ অবস্থায় হাজার-হাজার পরিবার শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয়। তাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের।
পাকবাহিনী বর্তমান কৃষি অফিস প্রাঙ্গণে মেলান্দহ উপজেলার – সরুলিয়া গ্রামের হুরমুজ আলী ওরফে বুচা সরদারের দুই পুত্র চান ও তােতাকে নির্যাতন শেষে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়। মুক্তিযােদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস (দরবেশ) ১৪ই ডিসেম্বর মাহমুদপুর পয়লা ব্রিজ যুদ্ধে অস্ত্রসহ ধরা পড়লে তাকে ট্রাকের পেছনে বেঁধে রাস্তায় ঘােরানাে হয়। এতে তিনি রাস্তায়ই শহীদ হন। ২২শে আগস্ট (৫ই ভাদ্র) ইসলামপুর গােরস্থানে রাজাকার প্রধান আলী নেওয়াজ খান লােহানীর উপস্থিতিতে কুখ্যাত আলবদর আক্রাম খানের গুলিতে মতিউর রহমান (মতি) শহীদ হলে তাঁকে মাটিচাপা দেয়া হয়। কুলকান্দির এ বি এন শহীদ স্মৃতি হাইস্কুল প্রাঙ্গণে পাকবাহিনী একসঙ্গে এগারাে জনকে হত্যা করে।
ইসলামপুরে বিচ্ছিন্নভাবে অনেককে হত্যা করা হলেও গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে একটি – কুলকান্দি গণহত্যা ৮ই জুলাই পাকবাহিনী এখানে ১১ জনকে একসঙ্গে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে। বর্তমানে গণহত্যার সেই স্থানটি আর নেই, যমুনার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামপুর উপজেলা ছিল ১১নং সেক্টরের অধীন। এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন কর্নেল আবু তাহের, বীর উত্তম। তাঁর নির্দেশমতাে কোম্পানি কমান্ডার বদিউজ্জামান (বদি), গােলাম মাওলা, ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন এবং জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। ২৩শে সেপ্টেম্বর এক সাের্স মারফত তাঁরা জানতে পারেন যে, পাকবাহিনী ট্রেনযােগে ইসলামপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট ও দেওয়ানগঞ্জ থেকে জামালপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। এ সংবাদের ভিত্তিতে মুক্তিযােদ্ধাদের পক্ষে আলাউদ্দিন জোদ্দার রেললাইনে মাইন পুঁতে রাখেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, আনুমানিক রাত ১টায় এই স্থান থেকে একশ গজ দূরে পাকবাহিনীর ট্রেনটি থামে এবং পাকসেনারা পজিশন নিয়ে গােলাবর্ষণ শুরু করে। ফলে এ অপারেশনে মুক্তিযােদ্ধারা ব্যর্থ হন। তবে এ যাত্রায় ব্যর্থ হলেও পরে ইসলামপুরের সভারচর ও মরাকান্দি দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদীপথে পাকবাহিনীর দুটি নৌযান মুক্তিযােদ্ধারা আক্রমণ করেন। এযুদ্ধে পাকসেনাদের একটি নৌযান ব্রহ্মপুত্র নদে ডুবে যায় এবং অপর নৌযানটির পাঁচজন পাকসেনাকে মুক্তিযােদ্ধারা অস্ত্রসহ আটক করেন।
মুক্তিযােদ্ধারা বুরুঙ্গি বিলের রেলব্রিজটি এন্টিট্যাংক মাইন দিয়ে উড়িয়ে দেন। এ অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন আব্দুল বারী মণ্ডল, সুবাস চন্দ্র দাস (রতন), মােহাম্মদ আলী, বক্কর মিয়া, শাহ নেওয়াজ, আব্দুল আজিজ, লুৎফর রহমান প্রমুখ। নূরুল হকের নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা প্রথমে ধর্মকুড়া পাটগুদাম এবং পরে রাজাকারদের ঘাঁটিতে অপারেশন চালান। কমান্ডার বদিউজ্জামান, কমান্ডার শাহ্ মােহাম্মদ জালাল উদ্দিন এবং হাজী মােতালেব বিস্ফোরক দিয়ে দিঘলকান্দি ব্রিজ উড়িয়ে দেন। এখান থেকে তাঁরা রাইফেলসহ দশজন রাজাকারকে আটক করেন। পরে জালাল কোম্পানি ৬৮টি রাইফেলসহ আরাে কয়েকজন রাজাকারকে আটক করে। হাজী আব্দুল মােতালেব ইসলামপুর থানা ও পােস্ট অফিস অপারেশনে সাহসী ভূমিকা রাখেন। অপরদিকে মুক্তিযােদ্ধা মানিকুল ইসলাম বুরুঙ্গি বিল ও ইসলামপুর এক্সচেঞ্জ অফিসে সফল অভিযান পরিচালনা করেন। ৬ ও ৭ই ডিসেম্বর জালাল কোম্পানির নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা পাকবাহিনীর ইসলামপুর থানা ক্যাম্পসহ ঋষিপাড়া (ধর্মকুড়া), পলবান্ধা, বেপারীপাড়া, বাইদে বিল, অষ্টমিঘাট, ধর্মকুড়া বাজার, খেয়াঘাট, পশ্চিম বাহাদুরপুর ও পাথরঘাটিতে মরণপণ যুদ্ধ করে ইসলামপুর শত্রুমুক্ত করেন।
৭ই ডিসেম্বর কমান্ডার শাহ্ মােহাম্মদ জালাল উদ্দিনসহ বীর মুক্তিযােদ্ধারা এবং মুক্তিকামী জনতা বিজয়ােল্লাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিজয় পতাকা উত্তোলন করে।
ইসলামপুর উপজেলার শহীদ মুক্তিযােদ্ধারা হলেন- আমান উল্লাহ কবির, বীর বিক্রম (পিতা আহাম্মদ আলী সরকার, লাউদত্ত; ৮ই সেপ্টেম্বর পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে শহীদ), ডা. হাসিবুর রহমান (পিতা আব্দুর রহমান, কুলকান্দি), আব্দুল হাকিম (পিতা মহির উদ্দিন, কুলকান্দি), মতিউর রহমান (পিতা আজিম উদ্দিন ফরাজী, মুখশিমলা), আবু তাহের (পিতা ইমার উদ্দিন, পিরিজপুর), আব্দুল হাকিম (পিতা মহির উদ্দিন, কুলকান্দি), আব্দুস সামাদ (পিতা নাটু দেওয়ানী, মুজাআটা), খবির উদ্দিন (পিতা আব্দুল আজিজ, খবিরাবাদ), মজিবর রহমান (পিতা রিয়াজ উদ্দিন, ভেঙ্গুরা), খােরশেদ আলম (পিতা কামরুজ্জামান, লাউদত্ত) এবং আব্দুল কুদ্দুস (দরবেশ)। এ উপজেলার আরেকজন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযােদ্ধা হলেন মিজানুর রহমান খান, বীর প্রতীক।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদের দ্বারা ইসলামপুরের বহু নারী পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন। ইসলামপুরের বীরাঙ্গনাদের মধ্যে ৭ জনের নাম জানা যায় (দেখুন ইসলামপুরের বীরাঙ্গনা)।
ইসলামপুরে শহীদ মুক্তিযােদ্ধাদের স্মরণে ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। কুলকান্দি যমুনাতীর গণহত্যায় শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে কুলকান্দিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শহীদস্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়। ধর্মকুড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাশেদ মােশাররফ টেকনিক্যাল এন্ড বি এম কলেজ। এছাড়া দুজন মুক্তিযােদ্ধার নামে দুটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। এর একটি পৌর গােরস্থান থেকে পৌরসভা পর্যন্ত শহীদ বীর মুক্তিযােদ্ধা মতিউর রহমান সড়ক। অপরটি দরিয়াবাদ বীর মুক্তিযােদ্ধা মােহাম্মদ আলী মাস্টার সড়ক। [ভােলা দেবনাথ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড