You dont have javascript enabled! Please enable it!

ইসলামপুর পাকঘাঁটি আক্রমণ

ইসলামপুর পাকঘাঁটি আক্রমণ (চাপাইনবাবগঞ্জ সদর) পরিচালিত হয় নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে। মুক্তিযােদ্ধাদের এ আক্রমণ ব্যর্থ হয়। ৯ জন মুক্তিযােদ্ধা শহীদ হন।
চাপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুরে পাকিস্তানি হানাদারদের একটি শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে চাপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার মিরেরচরে হাবিলদার সানাউল্লাহর নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা একটি অভিযান পরিচালনা করেন। এ অভিযান সফল না হওয়ায় চরবাগডাঙ্গায় অবস্থানরত মুক্তিযােদ্ধারা কিছুটা হতাশ হন। এ অবস্থায় মুক্তিযােদ্ধাদের একটি দল টহলে গেলে রাজাকারদের সঙ্গে তাঁদের গুলি বিনিময় হয়। গুলিতে গেরিলাযােদ্ধা ইসমাইল ও আবুল হােসেন আহত হন। এতে মুক্তিযােদ্ধাদের মানসিক অবস্থা আরাে খারাপ হয়। তবে টহল দল ২ জন রাজাকারকে ধরে আনতে সক্ষম হয়। পরের দিন দুপুরে মুক্তিযােদ্ধাদের বাগডাঙ্গা ক্যাম্পে খবর আসে যে, রাতে ইসলামপুরে অবস্থিত পাকসেনাদের শক্ত প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে আক্রমণ করা হবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাগডাঙ্গার সমস্ত মুক্তিযােদ্ধা এ গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে অংশ নেন। বিশিষ্ট মুক্তিযােদ্ধা সিভিল স্টাফ অফিসার বদিউজ্জামান টুনু অভিযানে নেতৃত্ব দেন। ফরিদপুর বিওপি থেকেও মুক্তিযােদ্ধারা এ আক্রমণে অংশ নেন। রাতে ইসলামপুর ঘাঁটি আক্রমণ করা হয়। পাকসেনারা প্রতি-আক্রমণ করলে সারারাত যুদ্ধ চলে। যুদ্ধে ৯ জন মুক্তিযােদ্ধা শহীদ হন। একজন ছাড়া বাকি শহীদদের লাশ আনা সম্ভব হয়নি। ইসলামপুর ঘাটি আক্রমণে যারা শহীদ হন তাঁদের মধ্যে ছিলেন এ অঞ্চলের বিশিষ্ট গেরিলাযােদ্ধা গােলাম মােস্তফা বাঘা ও মােস্তাফিজুর রহমান। মােস্তফা একজন সাহসী যােদ্ধা হিসেবে বাঘা’ নামে পরিচিতি পান। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি ধরা পড়েন। শত্রুরা পরের দিন তাঁকে বেয়নেট চার্জ করে হত্যা করে। ইসলামপুর ঘাঁটি আক্রমণ করে পাকসেনাদের পরাস্ত করা যায়নি বটে, তবে এ আক্রমণের কৌশল ও ফলাফল থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা মুক্তিযােদ্ধারা অন্যান্য যুদ্ধে কাজে লাগান। [মাযহারুল ইসলাম তরু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!