বীর বিক্রম ইয়ার আহমেদ
ইয়ার আহমেদ, বীর বিক্রম (১৯৪৭-১৯৭১) সুবেদার নায়েক ও শহীদ বীর মুক্তিযােদ্ধা। তার জন্ম ১৯৪৭ সালে ফেনী জেলার অন্তর্গত ফুলগাজী উপজেলার বালুয়া গ্রামে। তাঁর পিতা নজির আহাম্মদ এবং মাতা মােসা. রােকেয়া বেগম। তিনি স্থানীয় বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন।
ইয়ার আহমেদ ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যােগ দেন এবং চট্টগ্রাম সেনানিবাসে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ নিরীহ বাঙালিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যােগদান করেন। তিনি ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বে চিতলিয়া, পরশুরাম ও বেলনিয়া অঞ্চলে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে বহু সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বের স্বাক্ষর রাখেন। ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনীর ১০ম বেঙ্গলের একটি কোম্পানি গােলন্দাজ বাহিনীর মর্টারের সহায়তায় চিতলিয়ার উত্তরাংশে পাকসেনাদের প্রতিরক্ষাব্যুহের ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। এ অভিযানে রেল লাইন ও রােডের কাছের বাংকারে অন্য মুক্তিযােদ্ধাদের সঙ্গে তিনিও দায়িত্বরত ছিলেন। মুক্তিযােদ্ধাদের মধ্যে নায়েক সুবেদার ইয়ার আহমেদ ছিলেন খুবই সাহসী। প্রথম থেকেই তিনি অত্যন্ত নির্ভীকভাবে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যান। ৬ই নভেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে ৪ ঘণ্টার মতাে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর তার কোম্পানি চিতলিয়ার উত্তরাংশ দখল করে পরশুরাম ও ফেনীর মধ্যকার সড়ক যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এক পর্যায়ে যুদ্ধরত অবস্থায় শত্রুবাহিনীর গুলিতে তিনি শহীদ হন। স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গ এবং বীরত্ব ও সাহসিকতা অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করা হয়। ছিলেন তিনি অবিবাহিত। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড